টাঙ্গাইল জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র, টাঙ্গাইল পৌর এলাকার পাড়দিঘুলিয়া মৌজার কলেজপাড়া এলাকায় ঐতিহ্যবাহী বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়টি অবস্থিত।
১৪২ বছরের প্রাচীন এই বিদ্যালয়টি অনেক চড়াই- উৎরাই পেরিয়ে আজকের এই অবস্থান অর্জন করেছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক বিদ্যালয়টির গৌরবময় সংক্ষিপ্ত ইতিহাস-
৩ এপ্রিল ১৮৮০ সালে তৎকালীন কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী টাঙ্গাইল মহকুমার একটি সাধারণ বিদ্যালয়কে উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত করেন। সেই সময় ময়মনসিংহ জেলার জেলা প্রশাসক হ্যারাল্ড গ্রাহামের নামে এর নামকরণ করা হয় "গ্রাহাম ইংলিশ হাই স্কুল"।
প্রতিষ্ঠার পর প্রায় তিন বছর বিদ্যালয়টি অর্থ সংকটের ভেতর দিয়ে পরিচালিত হয়। গ্রাহাম ইংলিশ হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ আর্থিক সুবিধার জন্য টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর মরহুম নবাব বাহাদুর নওয়াব আলী চৌধুরী সাহেবের হাতে স্কুলটির পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। তিনি প্রায় দুই বছর এই স্কুল পরিচালনার ব্যয়ভার বহন করেন।
১৮৮৭ সালে টাঙ্গাইলের সন্তোষের জমিদার বিন্দুবাসিনী চৌধুরানী বিদ্যালয়টি পরিচালনার ব্যয়ভার নেন। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিদ্যালয়ের নাম তার নামানুসারে "বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয়" নামকরণ করা হয়।
বিন্দুবাসিনী চৌধুরানীর মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে তৎকালীন জমিদার প্রমথ নাথ রায় চৌধুরী ও মন্মথ নাথ রায় চৌধুরী বিদ্যালয়ের বর্তমান স্থান, উদ্যান, নিউ মার্কেটসহ ছাত্রাবাস ও স্টেডিয়াম সংলগ্ন পুকুরের জায়গা বিদ্যালয়ের নামে দান করেন এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করেন।
১৯১০ সাল পর্যন্ত তারা এ বিদ্যালয়ের পরিচালনার ব্যয়ভার বহন করেন এবং একই সালে তা ট্রাস্ট সম্পত্তি রূপে সমর্পণ করেন।
এরপর থেকে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মহকুমা প্রশাসক/জেলা প্রশাসককে প্রধান করে গঠিত বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয়টি সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে আসছিল। ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়।
১৯৯৬ সালে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা অর্জন করে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পুরস্কৃত হয়।
১৯৯৫ সালে ১৩তম ও ১৯৯৯ সালে ১৭তম জাতীয় স্কুল ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে বিদ্যালয়টি।
বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুল করিম।
তিনি জানান, বর্তমানে বিদ্যালয়ে ছাত্র সংখ্যা ১৮০০ জন। বিদ্যালয়ের ২টি শিফট- প্রভাতি ও দিবা শিফটে শ্রেণী কার্যক্রম চালু আছে। প্রভাতী শিফটে ৯০০ জন ও দিবা শিফটে ৯০০ জন ছাত্র পড়ালেখা করছে।