ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে পুলিশ হেফাজতে ঝুলিয়ে পিটিয়ে দুই দফায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সরকারি কাজে বাঁধা দানের অভিযোগ এনে পুলিশ মামলা দিয়ে। ভাঙ্গা পায়ের চিকিৎসা না দিয়ে পরের দিন আহত ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আদালতে বিচারক মো: মনিরুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রোববার দুপুরে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিনের বাবা ফল ব্যবসায়ী আবদুল খালেক হাওলাদার এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ছেলের সুচিকৎসা ও মুক্তি এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, গত ১০ আগস্ট জেলা পরিষদের সামনে একটি হোটেলে নাস্তা খাচ্ছিল তার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (২৮)। এ সময় হোটেল মালিককে তিন ব্যক্তি গালাগাল করছিল। রুহুল আমিন তাদের নিষেধ করায় ওই তিন ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে পুলিশ সদস্য আলাউদ্দিন আহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যকে মারধর ও সরকারি কাজে বাঁধাদানের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ সদস্য আকরাম হোসেন বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় এ মামলা দায়ের করেন। তাকে থানায় এনে দ্বিতীয় দফায় ঝুলিয়ে বেদম পিটিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। এতে তার একটি পা ভেঙ্গে গেছে বলেও জানান তিনি। তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ নেই। একটা ভদ্র ছেলে।
নির্যাতনের কারণে রুহুল আমিন দাঁড়াতে পারছিল না বলেও জানান তাঁর পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে তাকে হাসপাতালে সুচিকিৎসা না দিয়েই কারাগারে পাঠানো হয়। আহত রুহুল আমিনের সুচিকৎসা ও অবিলম্বে তাঁর মুক্তি দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিনের মা শেফালী বেগম ও বোন রেখা আক্তার এবং রিতু আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিনের পরিবার দাবি করেন, হোটেলে নাস্তা করার সময় যে ঘটনা ঘটেছে, এখানে পুলিশের কাজে বাঁধা দানের কোন বিষয় ছিল না। অথচ পুলিশ মামলা দিয়েছে পুলিশের কাজে বাঁধা দানের অভিযোগ এনে। মিথ্যা এ মামলাটি প্রত্যাহারেরও দাবি জানান ছাত্রলীগ নেতার পরিবার। ঘটনার পর থেকে ঐ দোকানটিও পুলিশ চাপ প্রয়েগ করে বন্ধ রেখেছে বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন সরকার জানান, পুলিশ সদস্যরা গাড়ির কাজ করে দোকানে নাস্তা খেতে গিয়ে হামলার স্বীকার হয়। তাই পুলিশ সদস্যকে মারধর ও সরকারি কাজে বাঁধাদানের অভিযোগে মামলা হয়েছে। রুহুল আমিনকে মারধর করা হয়নি। তবে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।