খুলনায় খেলাফত মজলিসের ওলামা ও সুধী সম্মেলনে সাখাওয়াত হোসাইন

এফএনএস (এফএনএস (এম এ আজিম; খুলনা) : : | প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ০৭:২১ পিএম

খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা আল্লামা সাখাওয়াত হোসাইন আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর ঐক্য ও একক প্রার্থী দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন। তিনি আশংকা করেছেন ইসলামী দলগুলোতে বিভক্তি হলে জালেমরা ক্ষমতাসীন হবে। খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আলেম-ওলামারা নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। শনিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ওলামা ও সুধী সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

খেলাফত মজলিসের খুলনা জেলা ও নগর শাখা এ সম্মেলনের আয়োজক। ‘বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, ইনসাফ ভিত্তিক সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশ গড়তে করণীয় শীর্ষক’ উলামা ও সুধী সম্মেলনের আয়োজন।

তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলের পক্ষ থেকে প্রতিটি আসনে একক প্রার্থী না হলে ইসলাম প্রিয় মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়বে। খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী দলগুলোর বিকল্প নেই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের নায়েবে আমীর শায়খুল হাদীস আল্লামা আহমদ আলী কাসেমী বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে হলে খেলাফত মজলিসের মাধ্যমে ভালো ও সৎ মানুষ তৈরি করতে হবে। ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা ছাড়া জনগণের মুক্তি সম্ভব নয়। প্রচলিত গণতন্ত্র অর্থনৈতিক দুরাবস্থা ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে পারেনা।

প্রধান বক্তা বিশিষ্ট ইসলামী গবেষক শায়েখ মুফতী আলী হাসান উসামা বলেছেন, অর্থনীতিতে সুদ, বীমায় সুদ, বৈদেশিক সুদ ও মহাজনী সুদ থাকলে বৈষম্য দূর হবে না। বৈষম্য দূর করতে হলে আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি ১৯৭২ সালের কুফরি সংবিধানে জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস উক্তির তীব্র সমালোচনা করেন। আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে খেলাফতের কাফেলায় শরীক হওয়ার আহবান জানান। তিনি প্রশ্ন করেন, রাষ্ট্রপতি যদি রাষ্ট্রের মালিক হন, তাহলে জনগণ কী তার প্রজা। তিনি চীন, রাশিয়া থেকে আমদানি করা মতবাদ এবং আমেরিকার গণতন্ত্র এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবেনা বলে উদাহরণ তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথি দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা শায়খুল হাদীস মাওলানা আলী আহমদ বলেছেন, রাষ্ট্রে হত্যা, দুর্নীতি বন্ধ করে শান্তি বজায় রাখার জন্য খলিফার রাষ্ট্র ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বা বিএনপির পক্ষে জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব না। এ জন্য ইসলামী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে জুলুম প্রতিরোধ করতে হবে। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মজিদ বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। গুম, খুন, নির্যাতন ও আয়না ঘর আবিস্কার করায় তাদের স্বৈরাচারী মনোভাব বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে আয়না ঘর চিরতরে বিলুপ্ত হবে। ১৫ বছরে বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরত আনার জন্য সরকারের কাছে আহবান জানান।  

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা এমদাদুল হক। অন্যন্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন মারকাজুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা রফিকুর রহমান, দারুল উলুম মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা নাসির উদ্দীন কাসেমী, তামিমুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এ এফ এম নাজমুস সউদ, খুলনা মহানগর খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এফ এম হারুন অর-রশীদ, খেলাফত মজলিসের যশোর জেলা সভাপতি হাফেজ মাওঃ আব্দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মীর মোহর আলী, বাগেরহাট জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মুফতি আমিরুল ইসলাম, মাওলানা ইউসুফ আজাদী, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ যোবায়ের, নগর সম্পাদক অ্যাড. শহীদুল ইসলাম যুব মজলিস নেতা মো. জামিরুল ইসলাম প্রমুখ। পরিচালনা করেন খেলাফত মজলিস হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন চঞ্চল ও ইমদাদুল্লাহ আজমী ডালিম।

সম্মেলনে দলেল নীতি, আদর্শের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে বিশিষ্ট ইসলামী গবেষক শায়েখ মুফতী আলী হাসান উসামা’র কাছে প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে শতাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান খেলাফত মজলিসে যোগদান করেন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW