মঙ্গলবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেলে র্যাব-১০, সিপিসি-১ যাত্রাবাড়ী ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, রাজধানীর পল্টন মডেল থানা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। ডাকাত দলের সদস্যদের গতিবিধি সন্দেহজনক হলে তাদের মাইক্রোবাসটি আভিযানিক দলটি পল্টন মডেল থানার ভিআইপি রোড এলাকায় থামিয়ে চ্যালেঞ্জ করলে মাইক্রোবাসে থাকা ৬ জন ব্যক্তি নিজেদের র্যাব পরিচয় প্রদান করে। এ সময় নিজেদের র্যাব সদস্য পরিচয় দিলেও পরিচয়পত্র যাচাই করে সেগুলো ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে তাদের আটক করে মাইক্রোবাসটি তল্লাশি করা হলে র্যাব লেখা ৪টি কটি ও ৪টি ক্যাপ, র্যাবের ভুয়া আইডি কার্ড ৫টি, হ্যান্ডকাফ ২টি, ওয়াকিটকি সেট ২টি, পিস্তলের কভার ১টি, ব্যাটন স্টিক ১টি, অতিরিক্ত নম্বর প্লেট ২টি, স্মার্টফোন ৫টি, বাটন ফোন ৪টি, এয়ারপড ১টি, হ্যান্ড গ্লোভস ১ জোড়া, হাতঘড়ি ৪টি, নগদ ২০,০৪৫ টাকা এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত সিলভার-পার্ল রঙের মাইক্রোবাসটি উদ্ধার ও জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, শহিদ মাঝি, মামুন ও মিজানদের পরিকল্পনামতে আসামি মো: জুয়েল বিশ্বাস ও মো: আলামিন দুয়ারী দিপুদ্বয় পূর্বেও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে দেশে বিভিন্ন স্থানে আসামি মো: আবুল কালাম আজাদ এর চালিত মাইক্রোবাস ব্যবহার করে ডাকাতি ও দস্যুতা করে আসছে। মঙ্গলবার শহিদ মাঝি ও মামুন ফোন করে রাজধানীর পল্টনস্থ আনন্দ ভবনের সামনে বর্ণিত আসামিদের একত্রিত করে এবং মিজানের কথামতো আসামি মো: আবুল কালাম আজাদ একটি মাইক্রোবাস নিয়ে আসে। আসামিরা ওই মাইক্রোবাসে উঠে এবং মাইক্রোবাসে মামুনের দেওয়া জব্দকৃত আলামত দেখতে পায়। পরবর্তীতে আসামিগণ মাইক্রোবাসে উঠে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকায় ডাকাতি করার পরিকল্পনা করে। গ্রেফতারকৃত আসামি মো: জুয়েল বিশ্বাস এর বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ মোট ১৫টি মামলা, আলামিন দুয়ারী দিপু এর বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনের মামলাসহ মোট ১৫টি মামলা, সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ মোট ০৬টি মামলা, আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও মাদকসহ মোট ০৬টি মামলা এবং বোরহান মিয়ার বিরুদ্ধে মাদক আইনের মোট ০৪টি মামলা রয়েছে। উল্লেখ্য যে, আসামি মো: জুয়েল বিশ্বাস মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ১৬ লক্ষ টাকা ডাকাতি করে এবং উক্ত মামলায় সে গ্রেফতার হয়। এছাড়াও রাজধানী পল্টন থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে এক জনকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ডাকাতি করে, যার ফলে ডিএমপি, ঢাকার পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা হয়। যার মামলা নং- ৪৩, তারিখ- ২৩/০৩/২০২৫ খ্রি.। গ্রেফতাকৃত জুয়েল বিশ্বাস চক্রটির নেতৃত্ব দিত। সে নতুন সদস্যদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ডাকাত দলে যুক্ত করত এবং ডাকাতিতে অংশ নিতে বাধ্য করত। গ্রেফতারকৃত জুয়েল বিশ্বাস গত ২৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ও সাজ্জাদ হোসেন গত ২৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে এবং আবুল কালাম আজাদ গত দুই বছর পূর্বে জেল থেকে জামিনে বের হয়।