মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যা, আদালতে দায় স্বীকার গৃহকর্মীর স্বামীর

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম
মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যা, আদালতে দায় স্বীকার গৃহকর্মীর স্বামীর

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মীর স্বামী রাব্বি শিকদার আদালতে দায় স্বীকার করেছেন। রিমান্ড শেষে তাকে হাজির করা হলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রিপন হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলার তদন্তে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছে পুলিশ।

আদালতে তোলার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক সহিদুল ওসমান মাসুম জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে ১০ ডিসেম্বর সকালে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার চরকয়া গ্রাম থেকে গৃহকর্মী আয়েশা ও তার স্বামী রাব্বি শিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ১১ ডিসেম্বর আয়েশার ছয় দিন এবং রাব্বির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এই ঘটনায় নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম ৮ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ৫ ডিসেম্বর আসামি আয়েশা খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে তাদের বাসায় কাজ শুরু করেন। ৮ ডিসেম্বর সকাল অনুমান ৭টার সময় আজিজুল ইসলাম নিজের কর্মস্থল উত্তরা যান। কর্মস্থল থেকে স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি সাড়া পাননি।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, সকাল অনুমান ১১টার দিকে বাসায় ফিরে আজিজুল ইসলাম দেখেন, তার স্ত্রী লায়লা ফিরোজের গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা জখম রয়েছে এবং তিনি মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। একই সময়ে মেয়েকে গুরুতর আহত অবস্থায় মেইন গেটের দিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পরিছন্নতাকর্মী মো. আশিকের সহায়তায় তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাদীর ভাষ্য অনুযায়ী, বাসার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গৃহকর্মী আয়েশা সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় ঢোকেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মেয়ের একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে বেরিয়ে যান। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বাদী নিশ্চিত হন যে, সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে কোনো এক সময় ছুরি বা অন্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার স্ত্রী ও মেয়েকে গুরুতর জখম করে হত্যা করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, জবানবন্দির ভিত্তিতে ঘটনার পেছনের কারণ এবং জড়িতদের ভূমিকা যাচাই করে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে