প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বললেন, “আমাদের পরবর্তী যে সরকার থাকবেন, তাদের যদি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি মিনিমাম ভালোবাসা থাকে, নিজের মধ্যে যদি মিনিমাম ঈমান থাকে, যদি তাদের মধ্যে সত্যি মিনিমাম কৃতজ্ঞতাবোধ থাকে, আমরা যতটুকু কাজ করেছি সেগুলো এগিয়ে নিবেই। তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি সময় পাবেন। প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য আরো অনেক বেশি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।”
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, “প্রবাসী অ্যাপসের মাধ্যমে শত শত হাজার কোটি টাকা প্রবাসীদের থেকে আদায় করা হতো। যারা বিদেশে যাবেন কর্মীদের থেকে অনেক ধরনের দুর্নীতি হতো। সেটা বন্ধ করার জন্য আমরা প্রাণান্ত প্রচেষ্টা করেছি।”
ড. আসিফ নজরুল জানান, “আমাদেরকে আইওএম অনেক হেল্প করেছে। এটার জন্য আইএলও অনেক হেল্প করেছে। এটার জন্য আমরা ওভারসিজ অ্যামপ্লয়মেন্ট প্লাটফর্ম নামে সম্পূর্ণ একটা অনলাইন প্লাটফর্ম চালু করেছি। সমস্ত বিদেশে গমন ১০০ শতাংশ ডিজিটালাইজ করেছে। এখন ডিজিটালাইজেশন করার কারণে দুর্নীতি, হয়রানি, ভোগান্তি হওয়ার সুযোগ অনেক কমেছে। তারপরও মেশিনের পিছনে তো মানুষ থাকে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, সেই মানুষগুলোকে এই দায়িত্বটা পালন করতে হবে।”
‘যারা ভোটের জন্য নিবন্ধন করেছেন প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পারবেন। আমি সবার কাছে অত্যন্ত আনন্দের সাথে বলতে চাই, প্রবাসীদের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার যে দৃষ্টিভঙ্গি, সেটা আমরা প্রতিফলন করে ঢাকা এয়ারপোর্টে প্রথমবারের মত অনেক রুটিন কাজ করেছি। প্রবাসীদের জন্য আমাদের রুটিন কাজের বাইরে প্রথমবারের মত কিছু স্টেপ নিতে পেরেছি। অবশ্যই এগুলো যথেষ্ট না’-উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সৌদি আরবের সাথে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে। চুক্তি করার সাথে সাথে ওদের ইম্প্যাক্ট বোঝা যায় না, কিন্তু একটা ভালো ইম্প্যাক্ট অবশ্যই আসবে। সৌদি মিনিস্টার আমাকে বলেছেন, তোমাদের অনেক সরকার অনেক চেষ্টা করেছে, এটা হয়নি। আমাদেরকে বাংলাদেশি মিশনের মানুষজন বলেছেন পাকিস্তান বা ইন্ডিয়ার সাথে ওই ধরনের কোনো চুক্তি হয়নি। বাংলাদেশের সাথে হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা যাওয়ার পর শুনতাম, মালয়েশিয়ায় যারা শ্রমিক থাকে তারা দেশে আসতে পারে না। আসলে আর ফিরে যেতে পারে না। কারণ তাদের সিংগেল ভিসা দেওয়া হতো। আমরা অনেক রিকুয়েস্ট করে এটাকে মাল্টিপল ভিসা করতে পেরেছি। প্রথমবারের মতো মাল্টিপল ভিসা হয়েছে। মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট নিয়ে অনেক অভিযোগ শোনা যায়। মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেটকে আমরা সম্পূর্ণ ডিলিস্টিং করেছি। আমরা স্ট্রংলি বলেছি, আমরা সিন্ডিকেট হতে দিব না। এখানে প্রবাসী শ্রমিকদের থেকে অবৈধভাবে অনিয়ন্ত্রিত মুনাফা অর্জন করে যে সিন্ডিকেট হয়েছিল, সেটা ভাঙার চেষ্টা করেছি। অন্তত হতে দেইনি এখনো। আমাদের মনে হয়, আমাদের আরো অনেক কিছু করার আছে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।