হোমনায় থানা হেফাজতে নারী আসামির আত্মহত্যা

এফএনএস (মোর্শেদুল ইসলাম শাজু; হোমনা, কুমিল্লা) : | প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম
হোমনায় থানা হেফাজতে নারী আসামির আত্মহত্যা

কুমিল্লার হোমনা থানা থেকে সতীনের ছেলেকে ছুরিকাঘাত করা এক নারী আসামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।  থানার নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কের একটি কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় হামিদা বেগম প্রকাশ ববিতা (৩২) নামের ওই নারী আসামির লাশ উদ্ধার করা হয়। দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট এসে নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। হামিদা আক্তার ববিতা উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামের প্রবাসী খলিল মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, সঙ্গে চার বছরের একটি ছেলে সন্তান থাকায় ববিতাকে রাতে নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কে রাখা হয়েছিল। সেখানে তার সঙ্গে ওয়ারেন্টভুক্ত আরেক নারী আসামি ও নারী গ্রাম পুলিশ ছিলেন। ভোরে তারা ওয়াশরুমে গেলে এই ফাঁকে ববিতা ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে এসে সুরতহাল প্রতিবেদ তৈরির পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও জানান, বুধবার সকালে ববিতা তার সতীনের ১১ বছরের ছেলে সায়মনকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে শিশুটির পেটে গুরুতর আঘাত লাগে এবং নাড়িভূঁড়ি বের হয়ে আসে। ছেলেকে বাঁচাতে মা কুহিনুর আক্তার ছুটে এলে তাকেও তিনি ছুরিকাঘাত করে আহত করেন। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ববিতাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। স্বজনরা মা ও সন্তানকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আহত মা কুহিনুর আক্তার ও ছেলে সায়মনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ ববিতাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় আহত শিশুর চাচা স্বপন মিয়া বাদী হয়ে রাতে হোমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

হোমনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল করিম বলেন, সতিন ও তার ছেলেকে ছুরিকাঘাত কারার অভিযোগের মামলায় হামিদা বেগম প্রকাশ ববিতাকে গ্রেফতার করে থানার নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কে রাখা হয়েছিল। সেখানে ওয়ারেন্টভুক্ত একজন নারী আসামী ও তাদের পাহারায় একজন নারী গ্রাম পুলিশ ছিলেন। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ওয়ারেন্টভুক্ত নারী আসামী ও গ্রাম পুলিশ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে এই সময়ের মধ্যেই ববিতা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে