সিঙ্গাপুরেই হাদির জরুরি অস্ত্রোপচারের অনুমতি, অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির সিঙ্গাপুরেই জরুরি অস্ত্রোপচারের অনুমতি দিয়েছে তার পরিবার। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকা হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতি এবং সংগঠনটির ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, ওসমান হাদি বর্তমানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন এবং পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিঙ্গাপুরেই তার অস্ত্রোপচার হবে।

হাদি জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মাধ্যমে পরিচিতি পান। তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গণসংযোগের অংশ হিসেবে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় গেলে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার মাথায় লাগে।

আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হাদির চিকিৎসা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, ফোনালাপে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাদির অবস্থা “অত্যন্ত সংকটাপন্ন” বলে উল্লেখ করেন এবং চলমান চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন।

ইনকিলাব মঞ্চ তাদের বিবৃতিতে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, “ওসমান হাদি যদি রবের ডাকে সাড়া দিয়ে শহীদের কাতারে শামিল হন, সেক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব নিশ্চিতকরণে স্বাধীনতাকামী মজলুম জনতাকে শাহবাগে জড়ো হওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।” সংগঠনটি আরও জানায়, অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হামলায় জড়িত ব্যক্তি যদি ভারতে পালিয়ে যায়, তাহলে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যে কোনো মূল্যে তাকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত আনার দাবি জানানো হবে।

অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং হাদির সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চাওয়া হয়েছে।