হাদি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল সিলেট, ভারতীয় হাইকমিশনে কড়া নিরাপত্তা

এফএনএস (এইচ এম শহিদুল ইসলাম; সিলেট) : | প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম
হাদি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল সিলেট, ভারতীয় হাইকমিশনে কড়া নিরাপত্তা

আধিপত্যবাদ বিরোধী বিপ্লবী জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে কম্পিত হয়ে ওঠে সিলেট নগরীর রাজপথ। জুমার নামাজ শেষে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদী মিছিল ও সমাবেশ করে। সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিও ছিল দৃশ্যমান।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর। শুক্রবার জুমার নামাজের পর নগরীর সিটি পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টাস্থ বিজয় চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে মহানগর ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

সমাবেশে বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, হত্যা, দমন-পীড়ন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কোনো আন্দোলন দমন করা যাবে না। বরং এসব কর্মকাণ্ড জনগণের ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করবে। তারা অবিলম্বে শহীদ হাদির হত্যার বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালের পর থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে শোষণ ও নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের পর এই আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিবাদী শক্তির পক্ষে দাঁড়িয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। বক্তারা আরও বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে এসব ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দেবে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগরের সভাপতি শাহীন আহমদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের একজন সাহসী যোদ্ধা। তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে দেশ ও জাতির কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

সমাবেশের আগে জুমার নামাজ শেষে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর দরগাহে শহীদ হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্রজনতার আরেকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জুলাই যোদ্ধা, এনসিপির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বিক্ষোভ ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে সিলেট নগরীতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। নগরীর সোবহানীঘাট এলাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। জুমার নামাজের আগ থেকেই পুলিশ, সিআরটি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে দেখা গেছে। এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়।

সার্বিকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও নগরজুড়ে ছিল বাড়তি সতর্কতা। এদিকে শরিফ ওসমান হাদির হত্যার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় মশাল মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সিলেট কল্যাণ সংস্থা।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে