সেনবাগে

মেডিকেলে চান্স পাওযা জান্নাতুল আরফিনেরলেখাপড়ার দায়ীত্ব নিলেন তারেক রহমান

এফএনএস (মোঃ জাহাঙ্গীর আলম; সেনবাগ, নোয়াখালী) : | প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম
মেডিকেলে চান্স পাওযা জান্নাতুল আরফিনেরলেখাপড়ার দায়ীত্ব নিলেন তারেক রহমান

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কৈইয়াজলা গ্রামের আনসার আলী ভুঁইয়া বাড়ির মৃত আব্দুল ওয়াদুদ ও শাহিদা আক্তার দম্পতির বড় মেয়ে জান্নাতুল আরফিন এবছর সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার এই সাফল্যে আনন্দিত শিক্ষক ও এলাকাবাসী। তবে দুশ্চিন্তায় রয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থী জান্নাতুল আরফিন ও পরিবার।  ইতিমধ্যে বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার দৃষ্টি গোচর হলে তিনি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে মেধাবী শিক্ষার্থার লেখাপড়া দায়ীত্ব নেন।

এউপলক্ষে মেধাবী শিক্ষার্থী জান্নাতুল আরফিনের সেনবাগের ডমুরুয়া ইউনিয়নে কৈয়াজলা গ্রামের বাডিতে আজ সোমবার বিকেল ৩ টায় তারেক রহমানের পক্ষ থেকে মেধাবী শিক্ষার্থী জান্নাতুল আরফিনের লেখাপড়ার খরছে টাকার চেক আনুষ্ঠানিক ভাবে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই চেক হস্তান্তর করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চীফহুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সেনবাগ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোক্তার হোসেন পাটোয়ারী, জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন, সেনবাগ পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব শহিদ উল্লাহ ,বিএনপি নেতা মিয়া মোহাম্মদ ইলিয়াস,বিএনপি নেতা বাহার উল্লাহ বাহার,মহিলাদল নেত্রী সুফিয়া আক্তারসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী।

তারেক রহমানের মহতি উদ্যোগে দারুণ খুশি শিক্ষার্থী পরিবার ও এলাকাবাসী। মেধাবী শিক্ষার্থী জান্নাতুল আরফিনের সকল লেখা পড়ার দায়ীত্ব বিএনপির ভারাপ্রাপ্ত চেয়ার তারেক রহমান নেওয়া কৃতজ্ঞা প্রকাশ করে বলে, তিেিনিযন লেখা পড়া করে মানুষেণ মতো মানুষ বিশেষ করে তারেক জিয়ার মতো মানবিক মানুষ হয়ে জনগণের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে জনকল্যানে কাজ করতে পারেন এজন্য সকলের নিকট দোয়া প্রর্থনা করেন।।

জানাগেছে, মেধাবী শিক্ষার্থী জান্নাতুল আরফিন সেনবাগের ডমুরুয়া ইউনিয়নের গাজীরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন জান্নাতুল আরফিন। এরপর আর্থিক সংকটের কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও আত্মীয়দের সহায়তায় ফেনীর জিয়া মহিলা কলেজে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকেও জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন তিনি। পিতার মৃত্যুর পর মা শাহিদা আক্তার চার সন্তান নিয়ে অথৈই সাগরে পড়েন । বাড়িতে সেলাই মেশিনের কাজ করে, টিউশনি করিয়ে, আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতায় সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে নেন তিনি।  মা শাহিদা আক্তার স্বামীর ভাগে পাওয়া মাত্র ৫ শতাংশ ধানের জমি ২০২৩ সালে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করেন । সেই অর্থেই বড় মেয়ের কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাব্যয় মেটানো হয়েছে এতদিন।

 এইচএসসি শেষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে প্রথম দফায় কোচিং বাবদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রথম বার কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন আরফিন। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার চট্টগ্রামে কোচিংয়ে ভর্তি হয়ে আরও প্রায় ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করেন। কঠোর পরিশ্রম, অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও আত্মবিশ্বাসের ফল হিসেবে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় আরফিন ৪০৪১তম স্থান অর্জন করে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। তবে ভর্তি, বইপত্র ও অন্যান্য খরচ নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আরফিন ও তার পরিবার।

শাহিদা আক্তার বলেন, পরিবারের শেষ সম্বল ধানের জমি বিক্রি করে মেয়েকে কোচিংয়ে ভর্তি করিয়েছি। এখন ভর্তি, বইসহ অনেক খরচ। সামনে কিভাবে পড়াশোনা চলবে তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। এটি এখন নতুন করে কপালে ভাজ পড়েছে। মেয়ে মানুষ এত দূরে থাকবে পড়ালেখা করবে সেটি এখনও স্বপ্ন। আল্লাহর কাছে চাই তিনি যেন একটা ব্যবস্থা করে দেন।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে জান্নাতুল আরফিন প্রথমেই মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, স্বপ্নের মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় আল্লাহর দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া। অষ্টম শ্রেণিতে বাবাকে হারানোর পর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় শুরু হয়। অনেক সময় মনে হয়েছে পড়াশোনা চালানো সম্ভব হবে না। কিন্তু আমার মা আমাকে কখনো হাল ছাড়তে দেননি। তিনি একাই আমার বাবা এবং মায়ের ভূমিকায় ছিলেন।

জান্নাতুল আরফিন বলেন, প্রথমবার মেডিকেলে চান্স না পেয়ে ভেঙে পড়েছিলাম। মনে হয়েছিল আমাকে দিয়ে আর হবে না। কিন্তু আমার পড়াশোনার জন্য মা জমি বিক্রি করেছেন। এই বিষয়টি আমাকে আরও বেশি দায়িত্বশীল করেছে। দ্বিতীয়বার চট্টগ্রামে কোচিং করতে তিন মাসে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মেডিকেল কলেজে ভর্তি ও পড়াশোনা অনেক ব্যয়বহুল। সেটি কিভাবে ম্যানেজ হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, এই সাফল্য শুধু আমার একার নয়। এটি আমার মা, শিক্ষক ও শুভানুধ্যায়ীদের সম্মিলিত অর্জন। ভবিষ্যতে একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। যারা আমার জন্য দোয়া ও সহযোগিতা করেছেন সবার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই। আমি যেন সবার উপকারে আসি সেই দোয়া চাই। একজন মানবিক ডাক্তার হতে চাই।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে