উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবরুদ্ধ করে রাখা, দুই সরকারি কর্মচারিকে মারপিট, লুটপাটের অভিযোগ তুলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ নানা নাটকিয়তায় বন্ধ হওয়া উচ্ছেদ অভিযান অবশেষে শুরু হয়েছে। বুধবার (৪ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনা করার পাশাপাশি অন্যান্য অবৈধ স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেহাই পেয়েছেন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীরা। উপজেলা সদরের নাজিমগঞ্জ বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, এলাকার প্রভাবশালীরা সরকারি জমি দখল করে নাজিমগঞ্জ বাজারে দীর্ঘদিন নানা কৌশলে পাকা দোকান ও বহূতল ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে আসছিলেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। কিন্তু দখলবাজরা প্রভাবশালী হওয়ায় সরকারি কর্তৃপক্ষ এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবির প্রেক্ষিতে কয়েকজন অবৈধ দখলকারীকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে বারবার নোটিশ প্রদান করা হয়। ওই আদেশ অমান্য করায় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে উচ্ছেদ অভিযানে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস। এসময় তাকে অবরুদ্ধ করে হেনস্থা করেন সাইদুর বস্ত্রালয়েয় মালিক সাইদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম ও তাদের পোষ্যবাহিনী। তারা ভূমি অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শহীদুল ইসলাম ও অফিস সহকারী রনজিৎ মন্ডলকে পিটিয়ে জখম করেন। সে কারণে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে বাধ্য হন তারা। তবে পরদিন আবারও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ভেঙে ফেলা হয়েছে সাইদুর বস্ত্রালয়ের একটি দোকন ঘর। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস বলেন, নোটিশ দেওয়ার পরেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করায় গত মঙ্গলবার সাইদুর বস্ত্রালয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে অতর্কিত হামলা করা হয়। হামলায় অংশগ্রহণকারীরা ক্ষমা চাওয়ায় তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একটি অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মন্ডল বলেন, নাজিমগঞ্জ বাজারে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী চার ব্যবসায়ীকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সাইদুর বস্ত্রালয়ও রয়েছে। নোটিশ করার পরেও স্থাপনা সরিয়ে না নেওয়ায় সাইদুর বস্ত্রালয়ের একটি দোকান ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের আরো তিনটি অবৈধ দোকান ঘর এক মাসের মধ্যে অপসারণ করার নির্দেশ দিয়েছি। নাজিমগঞ্জ বাজারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।