গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর, ফিলিস্তিনিদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

এফএনএস ডেস্ক : | প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর, ফিলিস্তিনিদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

দীর্ঘ ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর আজ রোববার (১৯ জানুয়ারি) ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বহুল প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তিন ঘণ্টা বিলম্বের পর বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে এটি কার্যকর হয়। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজিদ আল-আনসারি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, আজ ইসরায়েলের কাছে তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন রোমি গোনেন (২৪), এমিলি দামারি (২৮), এবং দোরোন স্টেইনব্রিচার (৩১)। হামাসের সশস্ত্র শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবেইদা এই নামগুলো প্রকাশ করেন।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজার রাস্তায় ফিলিস্তিনিরা বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। বাস্তুচ্যুত এক নারী আল-জাজিরাকে বলেন, "যুদ্ধবিরতির এই দিনটি আমার জীবনের অত্যন্ত আনন্দের। যুদ্ধ চলাকালে আমরা ভয়াবহতা ও মৃত্যু দেখেছি। আজকের শান্তির বার্তা আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।"

এক তরুণ বলেন, "যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে আমরা আজ সাময়িক মুক্তি পেয়েছি। আমার একমাত্র ইচ্ছে শিক্ষাজীবন শেষ করা। এই যুদ্ধ আমাদের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।"

গাজার শিশুদের আনন্দ নিয়েও তিনি বলেন, "শিশুদের জন্য এই যুদ্ধবিরতি সত্যিই খুশির সংবাদ। আশা করি, ইসরায়েল এই চুক্তি লঙ্ঘন করবে না।"

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা চালায়। এ সময় মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখের বেশি মানুষ। ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ফিলিস্তিনিরা আশাবাদী, এই শান্তি স্থায়ী হবে। কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া এ চুক্তি নতুন করে শান্তি আলোচনা শুরু করার সুযোগ তৈরি করতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW