দীর্ঘ ১৩ বছরের নীরবতা ভেঙে আগামী রোববার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। দুই দিনের এই সরকারি সফরকে দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে সম্পর্কোন্নয়নের সম্ভাব্য সূচনা হিসেবে দেখছে দুই দেশই। সফরকালে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নবযাত্রায় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সফরের সময় কয়টি চুক্তি সই হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি, তবে একাধিক চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তার ভাষায়, “বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইলে এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের সফর হওয়া অত্যন্ত জরুরি। উভয় দেশ এখন আবার একে অপরের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী।”
উল্লেখ্য, বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছিল। বিশেষত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে। রাজনৈতিক উত্তেজনার পাশাপাশি একে অপরের নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রদানেও কঠোরতা দেখা যায়।
সফরসূচি অনুযায়ী, রোববার বিকেলে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছাবেন ইসহাক দার এবং সোমবার সন্ধ্যায় দেশে ফিরে যাবেন। সফরের মূল অংশে সোমবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন তিনি।
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশা করছেন, এটি হতে পারে দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের জন্য একটি ‘টাইমলাইন-চেঞ্জিং’ মুহূর্ত।
এই সফরকে কূটনৈতিক মহল ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি শুধু আনুষ্ঠানিক সফর নয়— বরং একটি কৌশলগত পদক্ষেপ, যার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নতুন দ্বার উন্মোচনের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মাঝে দীর্ঘদিনের বিরাজমান অসন্তোষ ও ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম ভিত্তি হতে পারে এই সফর।