রাজশাহীর দূর্গাপুরে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ৬২ বিঘা সরকারী উন্মূক্ত জলাশয় জবর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন। এনিয়ে স্থানীয় ৫টি গ্রামের শতশত মৎস্যজীবি সহ সকল শ্রেনী পেশার জনসাধারনের মধ্যে ক্ষোভ ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুর্গাপুর পৌর এলাকার শালঘরিয়া গ্রামের আফজাল হোসেন, মারফত আলী, তৈয়ব আলী ও রেন্টু সহ স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী সরকারী জলাশয়টি জবর দখল করেছে। সরকারী সম্পদ জবর দখলকারীদের হাত থেকে উদ্ধার পূর্বক পূর্বের ন্যায় উন্মূক্ত করে দিয়ে ৫টি গ্রামের অসহায় শতশত মৎস্যজীবিদের জীবিকা নির্বাহে সহযোগিতা সহ জবর দখলকারীদেও বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে গত ২৮ নভেম্বর ওই এলাকার অসহায় শতশত মৎস্যজীবি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, দুর্গাপুর উপজেলার ৭৫ নং জেএল ভূক্ত সালঘড়িয়া মৌজায় ১নং খতিয়ানভূক্ত ৩২৩০, ৩২৩২, ৩২৩৩, ৩২৩৪, ৩২৩৫ ও ৩২৩৬ নং দাগে প্রায় ৬২ বিঘা আয়তনের ডাহার বিল নামক সরকারি উন্মূক্ত জলাশয় রয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর থেকে উক্ত জলাশয়ে সালঘড়িয়া, দুর্গাপুর, দেবীপুর, কাঁচুপাড়া, শানপুকুরিয়া ৫টি গ্রামের দুস্থ অসহায় হতদরিদ্র শতশত মৎস্যজীবি পরিবার মাছ ধরে নিজেদের আমিষের চহিদা পূরন সহ মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে চলতো। বর্তমানে ওই সরকারি উন্মূক্ত জলাশয়টি প্রভাবখাটিয়ে জবর দখল করেছেন শালঘরিয়া গ্রামের আফজাল হোসেন, মারফত আলী, তৈয়ব আলী ও রেন্টু সহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। বর্তমানে এলাকার মৎস্যজীবি ও হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা সেখানে মাছ ধরতে গেলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত ২৩ নভেম্বর দেবীপুর গ্রামের সহত্তর বছর বয়সী হতদরিদ্র মকবুল হোসেন শাহস করে জলাশয়টিতে মাছ ধরতে নামলে তাকে শাররীকভাবে লাঞ্চিত করে মাছ শিকারের জালদড়ি, ছিপ বরসি কেঁড়ে নেয় প্রভাবশালী আফজাল হোসেন। এরপর আর কোনদিন মাছ ধরতে এলে মেরে পঙ্গু করে ফেলার হুমকি দেয় আফজাল হোসেন সহ জবর দখলকারী প্রভাবশালীরা। এই বিষয়টি নিয়ে এলাকার ৫ টি গ্রামের মৎস্যজীবি সহ সকল শ্রেনী পেশার জনগনের মাঝে ক্ষোভ ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মূহুর্তে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী। জবর দখলকারী প্রভাবশালীদের হাতে লাঞ্চিত দেবীপুর গ্রামের সহত্তোর্ধ্ব বয়সী হতদরিদ্র মকবুল হোসেন বলেন, জলাশয়টিতে স্বাধীনতার পর থেকে মাছ শিকার করে পরিবার পরিজনদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। তবে এখন আমাদের সেই উন্মুক্ত জলাশয়ে এখন মাছ ধরতে পারছিনা। আমরা ওই বিলে মাছ ধরতে গেলে অভিযুক্তরা মারপিট করে পঙ্গু করে ফেলা সহ নানা প্রকার ভয়ভিতি ও হুমকি দিচ্ছে। জবর দখলকারী প্রভাবশালীদের হাত থেকে সরকারী উন্মূক্ত জলাশয়টি উদ্ধার করে মৎস্যজীবি ও হতদরিদ্র পরিবারের জীবিকা নির্বাহে সহযোগীতা করা সহ তদন্ত পূর্বক সরকারী সম্পদ জবর দখলকারী প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন ৫টি গ্রামের শত শত মৎস্যজীবি ও হতদরিদ্র পরিবার সহ এলাকাবাসী। অভিযোগ তদন্ত কমিটির প্রধান দূর্গাপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে, তদন্ত শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এবিষয়ে রাজশাহী জেলা অতিরিক্ত প্রশাসক (রাজস্ব) মোহা. যোবায়ের হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ওই এলাকার শতাধিক জনগন একটি অভিযোগ দায়ের করেছে, অভিযোগটি তদন্তের জন্য দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ইউএনও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।