পূর্ব শত্রুতার জেরধরে আপন চাচাকে পরিকল্পিতভাবে সহযোগিদের নিয়ে হত্যা করে পাথর বেঁধে লাশ ফেলা হয়েছিলো তিন নদীর মোহনায়। ঘটনার ১২দিন পর পুলিশ আটক ভাতিজার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে নিয়ে তল্লাশী চালিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত মাহাবুব হাওলাদার (৫০) জেলার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের মুন্ডুপাশা গ্রামের সেকেন্দার আলী হাওলাদারের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের আপন ছোট ভাই শহিদুল হাওলাদার ও তার ছেলে সুজন, বোনের ছেলে রিয়াদসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বুধবার সকালে বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম গ্রেপ্তারকৃত সুজনের বরাত দিয়ে বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি রাতে বাবুগঞ্জ উপজেলার রাহুতকাঠি খেয়াঘাট থেকে সুজন ও রিয়াদসহ ৭/৮ জন যুবক মাহাবুবের ট্রলারে উঠে শিকারপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পরবর্তীতে মাঝ নদীতে গিয়ে সুজন তার চাচাকে (ট্রলার চালক মাহাবুব) অন্যান্য সহযোগিদের সহায়তায় হত্যা করে। এরপর মাহবুবের মরদেহ পাথরের সাথে বেঁধে তিন নদীর মোহনায় ফেলে দেওয়া হয়। এরপর মাহাবুবের ট্রলারটি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে হত্যাকারীরা। মামলার বাদী নিহত মাহাবুব হাওলাদার বড় ভাই জামাল হাওলাদার জানান, প্রায় তিন বছর পূর্বে সুজন ও মাহাবুবের ছেলের সাথে মারামারি হয়। বিষয়টি ওইসময়ই মীমাংসা করা হয়েছিল। এনিয়ে সুজনের মনে ক্ষোভ ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে ওই ক্ষোভ থেকেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। থানা সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ ট্রলার চালক মাহাবুব হাওলাদারের ভাই জামাল হাওলাদার বাদি হয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করে বাবুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর ব্যাপক তদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজ মাহাবুবের ভাই শহিদুল হাওলাদার ও তার ছেলে সুজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সুজনের স্বীকারোক্তি মতে রিয়াদসহ আরো তিনজনকে আটক করে পুলিশ। ওইদিন বিকেলে সুজনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী তাকে নিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের কর্মীরা টানা ছয়ঘন্টা তল্লাশী চালিয়ে সন্ধ্যায় বাবুগঞ্জের কেদারপুর ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকার তিন নদীর মোহনা থেকে মাহাবুবের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে নিজেদের সন্দেহের তালিকার বাইরে রাখতে ও পুলিশের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতেই ট্রলার চালক মাহাবুবকে অপহরণের পর উদ্ধার ও বিচারের দাবিতে এলাকাবাসির মানববন্ধন এবং সড়ক অবরোধেও গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আনোয়ারুল হক বলেন, ট্রলার ঘাটের ইজারা নিয়ে দুই ভাইয়ের দ্বন্ধের কারণে অপহরণ ও হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে বুধবার বিকেল তিনটায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশ সুপার মো. শরিফ উদ্দীন।