ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে রেকর্ডের সরকারি/খাস জায়গা রেখেই ব্যক্তি মালিকানাধীন বসতবাড়ির জায়গায় জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার কবির আহমেদের বিরূদ্ধে। বাঁধা দেওয়ায় উল্টো চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের হুমকিও দিয়েছেন ঠিকাদার। উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামে এমন ঘটনা ঘটছে। স্থানীয়রা বলছেন শুধুমাত্র খরচ বাঁচানোর জন্য ঠিকাদার ও প্রকৌশলীরা বাচ্চু মিয়ার বসতবাড়ির জায়গায় রাস্তা নির্মাণের জন্য বল প্রয়োগ করছেন। এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এ বিষয়ের প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। এক পর্যায়ে মোহাম্মদ আলী ঠিকাদারের বিরূদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। এ বিষয়ে মুঠোফোনে কোন তথ্য দিতে নারাজ ঠিকাদার। উত্তেজিত হয়ে অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। মামলা, এলজিইডি অফিস ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, টিঘর পশ্চিম পাড়া থেকে সুলতানপুর পর্যন্ত ১৬ ফুট প্রস্থের কার্পেন্টিং রাস্তা নির্মাণের কাজ পেয়েছেন ঠিকাদার মো. কবির আহমেদ। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার মত। কাজটি পেয়েছেন মেসার্স লোকমান হোসেন নামের ফার্ম। কবির আহমেদ সাব কন্টাক্টার। রেকর্ডের ওই রাস্তার দাগ নম্বর ৩২৫৭। সরকারি কাঁচা রাস্তাটির বড় অংশ ভেঙ্গে পাশের খালে চলে গেছে। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা মূল রাস্তায় কাজ না করে খরচ কমাতে সীমানা চিহ্নের ওপাশের বাচ্চু মিয়ার (দাগ নং-৩২৫৮) ও মোহাম্মদ আলীর (দাগ নং-৩২৬২) ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার উপর দিয়ে সম্পূর্ণ রাস্তাটি নির্মাণের চেষ্টা করছেন। বাঁধা দেওয়ায় ঠিকাদারের লোকজনের সাথে স্থানীয়দের বাকবিতন্ডা ও উত্তেজনার ঘটনা ঘটে। পরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ঠিকাদারের আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে মোহাম্মদ আলী গত ১৩ জানুয়ারি বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘটনাস্থলে ১৪৪ ও ১৪৫ ধারা জারির আবেদন করেন। বাচ্চু মিয়া বলেন, রেকর্ডের রাস্তা ছেড়ে আমার বসতবাড়ির উপর কার্পেন্টিং রাস্তা করতে দিব না। উল্টো ঠিকাদার হুমকি ধমকি মামলার ভয় দেখাচ্ছেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা রইছ মিয়া ও শহিদ মিয়াসহ অনেকেই বলেন, বাচ্চু মিয়া গ্রামের মানুষের স্বার্থে নিজের বাড়ির জায়গা দিয়ে হাঁটতে দিয়ে বিপদ ডেকে এনেছেন। ঠিকাদার পাশের সরকারি জায়গা নিয়ে উনার কাছে কয়েক ফুট চাইতে পারতেন। পুরো রাস্তাটা উনার বাড়ির উপর দিয়ে হতে পারে না। ঠিকাদার জোর করে করতে চাচ্ছেন। সরাইল উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. আনিছুল ইসলাম রাস্তাটি বাচ্চু মিয়ার বাড়ির জায়গায় এই সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আগের রাস্তায় এলজিইডি ইষ্টিমিট করেছে। এখন মাটি ভরাট করে রাস্তা করা যাবে না। আর এলজিইডি মাটি ফেলার কাজ করে না। গ্রামবাসী মিলে সমঝোতায় রাস্তাটি হতে পারে। নতুবা হবে না।