কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের দিয়ারার চর কোনাচি পাড়া চরাঞ্চলের কৃষকদের মাঝে বাড়ির আঙিনায় পার্টনার ফিল্ড স্কুলের কার্যক্রমের মাধ্যমে আলো ছড়াচ্ছে রাজিবপুর কৃষি অফিস। বই-খাতা নিয়ে এসব স্কুলে পড়ছে গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীরা।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, পার্টনার প্রোগ্রাম এর আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চর রাজিবপুর এর ২০২৪-২৫ অর্থ বছর গম, ধান, ভুট্টা, ডাল ফসল ও উত্তম কৃষিচর্চার উপর ৭টি কৃষক মাঠস্কুল সফল ভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের দিয়ারার চর কোনাচি পাড়া গ্রামের ১৩ জন পুরুষ ও ১২ জন নারীসহ ২৫ জন কৃষক কৃষানি নিমগ্ন হয়ে শুনছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রতন মিয়া,উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছা: দিলসাদ জাহানের কথা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ হাফিজা খাতুন । স্কুলে আসা নানা বয়সের এসব নারী/ পুরুষ কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সবাই এখানে স্কুল ছাত্র ছাত্রী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ার-টেবিল ছাড়া এ স্কুলে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শেখানো হচ্ছে কীভাবে আধুনিক উপায়ে গম, ভুট্রা, ডাল চাষ করা যায়। তার রোগ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা, সার ও পানি ব্যবস্থাপনা, উপকারী-অপকারী পোকা সম্পর্কে মোট কথা বীজ হতে পুনরায় বীজ প্রাপ্তিতে যত আধুনিক উপায় আছে সবকিছু হাতে কলমে শেখানো হচ্ছে।
পার্টনার ফিল্ড স্কুলের ছাত্র কৃষক মনিরুজ্জামান বলেন, জমিতে সঠিক মাত্রায় সার, সঠিক সময়ে জমিতে পানি রাখার গুরুত্ব, সঠিক পদ্ধতিতে বালাইনাশকের ব্যবহার, আইপিএম পদ্ধতিতে পোকা দমনসহ এ স্কুলে পড়ে তারা অনেক কিছুই শিখতে পারছেন ।
মোহনগঞ্জ ৩ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ দিলসাদ জাহান বলেন, পার্টনার স্কুলে পড়ে কৃষকরা কৃষি ও পারিবারিক পুষ্টি বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠেছেন।
বিশেষ করে নারীরা হাতে কলমে এ শিক্ষাগ্রহণ করে সংসারে সন্তান লালনপালন ও পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মিটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারছেন। চর রাজিবপুর উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ রতন মিয়া বলেন, এটি পার্টনার প্রোগ্রামের গ্যাপের পার্টনার ফিল্ড স্কুল।
এ স্কুলে উৎপাদন থেকে ভোগ পর্যন্ত কিভাবে উত্তম কৃষির চর্চাগুলো প্রয়োগ করা যায় কৃষকদের বাস্তব ও হাতে কলমে ধারণা দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে কৃষকরা কৃষির আরও আধুনিক, বাণিজ্যিক ও স্মার্ট কৃষিতে রূপান্তর করতে পারবে বলে মনে করছি।
উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে পরিচালিত প্রতিটি স্কুলে ১৩ জন নারী ও ১২ জন পুরুষ মোট ২৫ জন কৃষক-কৃষাণী সপ্তাহে একদিন করে ১০ টি সেশনে ক্লাস করেন। উপজেলা কৃষি অফিসার ও এসএএও সহায়তাকারী হিসেবে এবং সংশিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আয়োজনকারী হিসেবে এ স্কুলের সেশন স্কুল পরিচালনা করছেন।