শক্তিশালী সবুজ অর্থনীতির ভিত্তি গড়তে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে

এফএনএস : : | প্রকাশ: ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:৫৯ এএম : | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:৫৯ এএম
শক্তিশালী সবুজ অর্থনীতির ভিত্তি গড়তে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে

বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য তরুণ। ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি তরুণদের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ১৬ লাখ। অন্যদিকে বাংলাদেশ নানা পরিবেশ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ৮ লাখ ২১ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে। এগুলোর ৬০ শতাংশ পুনরায় ব্যবহৃত হয় না। এই অপ্রক্রিয়াজাত বর্জ্য নদীনালায় জমা হয়, কৃষিজমি দূষিত করে এবং শহরের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবেশবান্ধব পণ্য ও সেবা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। সবুজ উদ্যোগ শুধু পরিবেশগত সমস্যা সমাধান করছে না, বরং বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান এক ধরনের ভোক্তা শ্রেণি তৈরি করছে, যারা পরিবেশ নিয়ে অত্যন্ত সচেতন। এটি বৈশ্বিক প্রবণতা। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী ৬৬ শতাংশ ভোক্তা পরিবেশবান্ধব ব্র্যান্ডের পণ্যের জন্য অতিরিক্ত মূল্য দিতেও আগ্রহী। বাংলাদেশেও এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে শহুরে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই প্রবণতা বাড়ছে। এই জনগোষ্ঠী পরিবেশবান্ধব ব্যবসার জন্য আদর্শ বাজার হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে প্লাস্টিক দূষণ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। প্লাস্টিকের বিকল্প নিয়ে কাজ করলে তরুণরা এই পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারবেন। তারা কম্পোস্টেবল (পচনশীল) ব্যাগ, সুপারির পাতা দিয়ে তৈরি প্লেট, কিংবা বাঁশের তৈরি টুথব্রাশ উৎপাদন ও বিক্রি করতে পারেন। এই ধরনের আরও নিত্যনতুন পণ্য নিয়ে তরুণরা এগিয়ে আসা প্রয়োজন। বিশ্ব জুড়ে প্রতি মিনিটে ১ মিলিয়ন প্লাস্টিকের বোতল ক্রয়-বিক্রয় হয়। আর প্রতি বছর ৫ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অর্ধেক প্লাস্টিকই একবার ব্যবহারযোগ্য, যার ৮৫ শতাংশই অপচনশীল বর্জ্য হিসেবে ছড়িয়ে পড়ছে। সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত ৭ বিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্যের ১০ শতাংশেরও কম পুনরায় ব্যবহৃত হয়। প্লাস্টিকের মাইক্রো অংশ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে নানা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে এবং পরিবেশসম্মত বিকল্প পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে।  বুকের তাজা রক্ত দিয়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার পথ তৈরি করে দিয়েছে এ দেশের তরুণসমাজ। তরুণদের নেতৃত্বে বৈষম্যহীন সমাজ ও দেশ গড়ার প্রস্তুতি চলছে। আমাদের তরুণরা যদি নিজেদের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নকে টেকসই ধারণার সঙ্গে সংযোগ ঘটাতে পারে, তবে তারা দেশে একটি শক্তিশালী সবুজ অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে তোলা অনেক সহজ হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW