শুল্ক মওকুফের পরও বেড়েই চলেছে মোটা চালের দাম

এফএনএস এক্সক্লুসিভ : | প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:৫৮ এএম : | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:৪১ পিএম
শুল্ক মওকুফের পরও বেড়েই চলেছে মোটা চালের দাম

শুল্ক মওকুফের পরও বাজারে বেড়েই চলেছে মোটা চালের দাম। সম্প্রতি নিম্ন আয়ের মানুষের ভরসা মোটা ও মাঝারি ধরনের চালের দাম বেড়েছে। অথচ দেশে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ মোটা ও মাঝারি চাল কেনে। আগে দেশীয় উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে কিংবা আমদানি হলে চালের দাম কমতো। কিন্তু এখন মৌসুম বা আমদানি কোনোটির প্রভাবেই চালের দামে তেমন তারতম্য হচ্ছে না। সম্প্রতি ভারত রফতানি শর্ত ও শুল্ক তুলে নেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ দুই দফায় চাল আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে। এখন ব্যবসায়ীদের চাল আমদানিতে ২৫ শতাংশের স্থলে মাত্র ২ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের পরও পাইকারি বাজারে পণ্যটির দামে কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি, বরং কয়েক দিনের ব্যবধানে মোটা ও মাঝারি চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) বেড়েছে ৫০-৬০ টাকা। বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) তথ্যমতে গত পাঁচ বছরে দেশে মোটা চালের দাম ৫৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ২০২০ সালের মার্চে মোটা চালের গড় দাম ছিল ৩১ টাকা ৪৬ পয়সা। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ টাকা ১১ পয়সায়। সাম্প্রতিক আমদানি ঘোষণার পরও দেশের প্রধান পাইকারি বাজারে মোটা চালের দাম বেড়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যানুযায়ী ২০২১ সালের নভেম্বরে দেশে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৪৪-৪৫ টাকায়। এ বছর একই চাল বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৫ টাকায়। ঢাকার বাইরে প্রান্তিক অঞ্চলগুলোয় পরিবহন খরচ ও মজুদপ্রবণতার কারণে এ দাম আরো বেশি।

সূত্র জানায়, পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি স্বর্ণা সেদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮৫০ টাকায়, আর ভালো মানের স্বর্ণা সেদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ টাকায়, গুটি স্বর্ণা ২ হাজার ৬০০ ও মোটা সেদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। তবে চিকন জাতের পারি সেদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়, মিনিকেট আতপ ৩ হাজার ২০০, মিনিকেট সেদ্ধ ২ হাজার ৯০০, কাটারি সেদ্ধ ৩ হাজার ১০০ থেকে ৪ হাজার ও কাটারি আতপ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

সূত্র আরো জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৯৫৭ টন চাল আমদানি হয়েছে। সম্প্রতি চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর ফলে আমদানি আরো বাড়তে পারে। পাশাপাশি চলতি মৌসুমে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। তবে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিলম্বিত বৃষ্টিপাতের কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় রয়েছে। কিন্তু দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে খাদ্যশস্য হিসেবে চালের চাহিদা বেড়েছে। তবে মধ্য ও উচ্চবিত্তদের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এবং একাধিক বিকল্পের কারণে চিকন চালের বাজারে তেমন অস্থিরতা নেই। মোটা চালের চাহিদা বেশি থাকায় সরবরাহ চেইনে একটু ঘাটতি দেখা দিলেই দাম বাড়তে থাকে।

এ প্রসঙ্গে চাক্তাই পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম জানান, দেশে খাদ্যশস্যের চাহিদা বাড়লেও সে অনুপাতে উৎপাদন বাড়ছে না। বিশ্ববাজারেও কয়েক বছর ধরে চালের দাম বেড়েছে। দেশে ডলারের উচ্চমূল্য, উৎস রফতানিকারক দেশগুলোয় ন্যূনতম রফতানি মূল্য ও শুল্কারোপ, আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক ইত্যাদি কারণেই চালের এ মূল্যবৃদ্ধি।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে