কুমিল্লায় পাসপোর্ট অফিসে চাকুরী দেয়ার নামে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কুমিল্লা অশোকতলা (মতিন মিয়ার বাড়ি, মসজিদ গলি রোড), এলাকার মৃত আনসার আলীর পুত্র আব্দুল জলিল (৬২) বাদী হয়ে কুমিল্লা বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ইং তারিখ ৩জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলো- প্লট নং-৩৮,কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরী এলাকার নাহার ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ মালিক মৃত লতিফ উদ্দিন ভূইয়ার পুত্র কামাল উদ্দিন ভূইয়া (ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের শ্যালক), মেসার্স নাহার ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর ম্যানেজার রতন মিয়া (৫৫) ও হিসাব রক্ষক মো: হাসান (৫৬)।
মামলার বিবরণে জানা যায়- কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর এলাকার নাহার ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজের মালিক, ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের শ্যালক কামাল উদ্দিন ভূইয়া এক সময় গম, আটা, মুড়ি ইত্যাদি খাদ্য সামগ্রী ও কাষ্টমস ঠিকাদার এবং ব্রাক লবনের সোল এজেন্টের ব্যবসা করতো। এক সময় নাহার ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজতে মালামাল প্রেরণ করতো। ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যালক কামাল উদ্দিন ভূইয়া দুলাভাইয়ের প্রভাবখাটিয়ে এবং সন্ত্রাসী বাহিনীদের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষকে চাকুরী দেয়ার নামে টাকা আত্মসাত, প্রশাসনের র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের লোকদেরকে বদলির নামে মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করেছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে অসহায় মানুষের দোকাপাট জোড়পূর্বক দখল, বাড়ি ঘর, কল কারখানা, জায়গা সম্পত্তি দখল করে ত্রাসের রাজস্ব সৃষ্টি করেছে। মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামে বহু ফ্ল্যাটের মালিক বনেগেছে। সাবেক মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে বহু অর্থের মালিক বনে গেছেন কামাল উদ্দিন ভূইয়া। কুমিল্লা অশোকতলা খান বাড়ির সামনে একটি বিশাল বাড়ি রয়েছে। লালমাইয়ের দক্ষিণ দিকে ৫০ একর জায়গা জোড়াপূর্বক দখল করে গ্যাস ডিপো তৈরী করে। সাবেক কাউন্সিলর শাহ আলম খানের সহযোগিতায় অশোকতলা ৩জনকে ক্রস ফায়ার দেয়া হয়। মন্ত্রীর শ্যালক কামাল অশোক তলা জলিল মিয়ার ছেলে রাজিব মিয়াকে পাসপোর্ট অফিসে চাকুরী দিবে বলে গত ২০/৭/২০২৪ইং তারিখ ২০ লাখ টাকা নিয়ে যায়। টাকা নেয়ার ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংকটাপন্ন দেখতে পেয়ে গত ৩ আগষ্ট ২০২৪ইং তারিখ দুপুরে নাহার ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজে আব্দুল জলিলসহ স্বাক্ষীরা গেলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে এবং দিতে অস্বীকার করে। এ সময় আব্দুল জলিলসহ স্বাক্ষীদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে কিল, ঘুষি, থাপ্পর মারতে থাকে। সাবেক মন্ত্রীর শ্যামল কামাল উদ্দিন ভূইয়ার কোমড় হতে পিস্তল বের করে তাক করে গুলি ছুঁড়তে থাকলে তার টার্গেট মিস হওয়ায় আব্দুল জলিলসহ স্বাক্ষীরা প্রাণে রক্ষা পায়। এ ঘটনার দিন আশে পাশের লোকজন আতঙ্কে ছিল। ওই দিন ওসি ফিরোজ আব্দুল জলিলকে গাড়ি করে থনায় নিয়ে আসে এবং হুমকি দেয়। কামাল হোসেনের নিকট টাকা চাইলে আব্দুল জলিল ও রাজিব কে জঙ্গি অপরাধে দিয়ে ক্রস ফায়ার দিয়ে প্রাণে হত্যা করে ফেলবে বলে ওসি ফিরোজ হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে পর আব্দুল জলিল অসুস্থ হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়। ৫ আগষ্টের পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্যালক কামাল উদ্দিন ভূইয়াসহ আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায় এবং কিছুদিন পর পর ছদ্মবেশে এলাকায় আসে। কামাল উদ্দিনের সন্ত্রাসী বাহিনী এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে আব্দুল জলিল বলেন- ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের শ্যালক কামাল উদ্দিন ভূইয়া তার দুলাভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে বিসিক এলাকায় এক সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরী করে। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে এলাকার নিরীহ মানুষদেকে হয়রানি, অত্যাচার অবিচার চালিয়ে আসছিল। এছাড়াও পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে বদলির নামে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক শত কোটি টাকা। মানুষের চাকুরী দেবে বলেও হাতিয়ে নিয়ে কোটি কোটি টাকা। অনেকেই তার খপ্পড়ে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে গেছে। আমার এই কামাল উদ্দিন ভূইয়ার বিচার ও আমার টাকা আদায়ের প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন দপ্তরে সুদৃষ্টি কামনা করছি।