নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে পিঠা উৎসব। নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলিকে পরিচয় করিয়ে দিতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর জ্ঞানচক্র একাডেমি এই পিঠাউৎসবের আয়োজন করে। দিনব্যাপি এই উৎসবে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত আনজুম অনন্যা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আলিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম মোহাম্মদ মাসুম, রহনপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ইসাহাক আলী, উপজেলা সমবায় অফিসার সুলতান আহমেদ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার আসমা খাতুন, জ্ঞানচক্র একাডেমীর পরিচালক সারোওয়ার হাবিব, প্রধান শিক্ষক নায়েমা খাতুন সহ অন্যরা।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটিতে সকাল থেকে নাচগান, বাহারী নকশা ও হরেক রকম মজাদার পিঠা নিয়ে চলে এই উৎসব। মেয়েরা লাল হলুদ শাড়ী, মাথায় গাদাফুলের মালাসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা নতুন পোশাক পড়ে উৎসবে অংশ নেয়। এতে অভিভাবকরাও অংশে নেয় ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে। বিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষার্থীরা ৮ টি স্টলে হরেক রকম মজাদার পিঠা প্রদর্শিত করেন। পিঠা উৎসব নকশি পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, আন্দাশা, গড়াগড়ি পিঠা, তিল পিঠা, গোলাপ পিঠা, ফুল পিঠা, ভাপা সুইচ রোল, দুলি পিঠা, পেঁয়াজ পিঠা, কানমুচরী, ছানার পুলি, শঙ্ক পিঠাসহ আরও কত নামের পিঠা তৈরি করে আনা হয়। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মায়েশা, ফয়সাল, নাইমুল ইসলামসহ অনেক শিক্ষার্থী বলেছেন, তাঁরা এত ধরনের পিঠা কখনো দেখিনি। জানতে পারলাম হারিয়ে যাওয়া পিঠাসহ নতুন পিঠার নাম। তাছাড়া তৈরি করা সুস্বাদু এই পিঠা খেয়ে ভাল লেগেছে। পড়ালেখার পাশাপাশি এ ধরনের উৎসবে অংশ নিয়ে মজা করলাম।
কয়েকজন অভিভাবক জানান, পিঠা উৎসবের মধ্যে দিয়ে নতুন পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছে। বিদ্যালয়ের এই ধরনের আয়োজনে তারা মুগ্ধ। সন্তানদের আনন্দ ও উল্লাস ছিল দেখার মত।
জ্ঞান চক্রের পরিচালক ও পিঠা উৎসবের আয়োজক সারোওয়ার হাবিব বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা পুলির সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনে ছেলে-মেয়েদের আনন্দের মাত্রাটা বেড়ে গেছে। এই ধরনের আয়োজন প্রতিবছর করার চেষ্টা করা হবে।
গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, অস্তিত্বকে এবং সকল বৈষম্যর বিরুদ্ধে তোমরা সর্বদা জাগ্রত থাকবে। যে বৈষম্য নিয়ে বাংলাদেশে আন্দোলন সেই ১৯৪৭ থেকে শুরু হয়েছিল তারপর সেই ধারাবাহিকতায় আজ ২৪। সেখানে আমরা সকলে একত্রিত হয়েছি একটা বড় অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য। অস্তিত্বকে টিকেয়ে রাখার জন্য। সকলে অনুপাদিত হয়ে এই পিঠা উৎসবে উজ্জীবিত হই। পরে তিনি বিচারক হিসেবে পিঠা উৎসব অংশ নেওয়া তিনজন শিক্ষার্থীকে বিজয়ী করেন। এতে ১ম হয়েছেন ৫ ম শ্রেনীর ছাত্রী মায়শা তাসনীম, ২য় ৫ ম শ্রেনীর ছাত্র নাইমুল ইসলাম, ৩য় হয়েছেন প্লে শ্রেণীর ছাত্র ফাইম ফয়সাল।