ধর্ম উপদেষ্টা

নামাজ মানুষকে অন্যায় ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে

এফএনএস (এ.কে. আজাদ সেন্টু; লালপুর, নাটোর) : | প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম
নামাজ মানুষকে অন্যায় ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে

 আমাদের এই বাংলাদেশকে গোটা পৃথিবীতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই। কেউ যদি কোন ধর্মের উপাশনালয়ের ওপর হামলা করে তাহলে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নামাজ মানুষকে অন্যায় ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে। তাই আমরা চাচ্ছি, আমাদের সমাজ অপরাধ মুক্ত সমাজ হোক। শনিবার বিকেলে নাটোরের লালপুরে নবনির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন কালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এসব কথা বলেন। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বিকেলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মসজিদ উদ্বোধনের ফলক উন্মোচন করেন । এসময় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আসমা শাহীন ।

লালপুর মডেল মসজিদের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন (পিপিএম), ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ফেরদৌস-উজ-জামান, পাবনা গণপূর্ত সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দিন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) ছাদেক আহমদ, যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন অধিশাখা) মো. সাজ্জাদুল হাসান প্রমুখ।

এ সময় স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান প্রধান, ছাত্র প্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মীসহ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এই মসজিদ আমরা তৈরি করে দিয়ে গেলাম আজকে, নামাজ পড়া হবে বলে। মসজিদ ফেলে রাখলে হবে না। মসজিদ আবাদ করতে হবে। নামাজ পড়তে হবে। আমরা যদি নামাজি হই, সমাজকে আমরা যদি নামাজি বানাতে পারি, তাহলে আমাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।

তিনি বলেন, নামাজ মানুষকে অন্যায় ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে। তাই আমরা চাচ্ছি, আমাদের সমাজ অপরাধ মুক্ত সমাজ হোক। আমাদের সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধের বিরাজ ঘটুক। আমাদের সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি  বিরাজ করুক। আর অন্তরে যদি হিংসা থাকে তাহলে মানবিক গুনাবলী বিরাজ করে না। আর অন্তরকে যদি সব ধরনের ময়লা থেকে পবিত্র রাখতে পারি, তাহলে এই জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

কোন হিংসুক জাতি, ছোট মনের মানুষ, ছোট মানষিকতার মানুষ যারা তারা বড় কাজ করতে পারে না। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ করে বন্ধুত্বের একটি আবহ তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি। উপদেষ্টা বলেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও উপজাতি সকলের এদেশে সমান অধিকার রয়েছে। প্রতিটি আন্দোলনে ও সাফল্যে তাদের অবদান রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তৃণমূল পর্যায়ে ইসলামী জ্ঞানের চর্চা ও গবেষণা কার্যক্রমের প্রসার ঘটাতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় তিনতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। গণপূর্ত অধিদপ্তর ইতিমধ্যে ৩৫০টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭০০ কোটি টাকা। এ মডেল মসজিদে একসাথে ৯৫০ জন মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারবেন। এরমধ্যে আলাদা ১২০ জন মহিলার নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। অক্ষম ও বয়স্কদের ওযু ও নামাজ আদায়ের সুব্যবস্থা রয়েছে। ইসলামিক গবেষণা কেন্দ্র এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয়, প্রশিক্ষণ, হজযাত্রী নিবন্ধন, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, অটিজম কর্নার, এতিমখানা, মৃতদেহ গোসল, ইসলামিক লাইব্রেরি ও ইসলামি বই বিক্রয় কেন্দ্র, গেস্ট রুম ও কনফারেন্স রুম ও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ৪৩ শতাংশ জমির উপর স্থাপনাটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলো সাইক্লোন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে