বিশ্বের অন্যতম ধনী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দেশের ডিজিটাল সংযোগের উন্নয়ন ও স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তিনি এই আমন্ত্রণ জানান।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মাস্ককে পাঠানো এক চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর প্রস্তাব দেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে আপনি এখানকার উদ্যমী তরুণদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন, যারা স্টারলিংকের সুবিধাভোগী হবে এবং প্রযুক্তির নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করবে।”
প্রধান উপদেষ্টা তার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানকে স্পেসএক্সের সঙ্গে সমন্বয় করে আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংক সেবা চালুর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “স্টারলিংকের সংযোগ বাংলাদেশের অবকাঠামোয় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে, বিশেষ করে তরুণ উদ্যোক্তা, গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত নারী এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।”
এর আগে, ১৩ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্কের সঙ্গে এক ফোনালাপে প্রধান উপদেষ্টা স্টারলিংক সেবা চালুর সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন। উভয় পক্ষই বাংলাদেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সরকারের এই উদ্যোগকে ইতোমধ্যে প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা ইতিবাচকভাবে দেখছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টারলিংক চালু হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সহজলভ্য হবে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি বড় অগ্রগতি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে স্টারলিংক চালু হলে দেশের টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। তবে এতে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন, সেবার ব্যয় এবং বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়গুলো।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নীতিগত কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা স্টারলিংকের মতো আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর জন্য বাংলাদেশে কাজ করা সহজ করবে।
প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে ইলন মাস্কের সফরসূচি চূড়ান্ত হলে এটি বাংলাদেশের প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ খাতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা কত দ্রুত শুরু হয় এবং এটি কীভাবে দেশের ডিজিটাল উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।