সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচন দ্রুত হওয়া জরুরি: উপদেষ্টা আসিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচন দ্রুত হওয়া জরুরি: উপদেষ্টা আসিফ
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া

বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় স্থবিরতা দূর করতে এবং নাগরিক সেবার উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার নির্বাচন দ্রুত হওয়া জরুরি বলে মত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তার সমাধান হিসেবে তিনি অবিলম্বে নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘নাগরিক ভোগান্তি কমাতে অন্তত সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার নির্বাচন দ্রুত হওয়া দরকার। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা স্বচ্ছ ও কার্যকর না হলে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’

বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রশাসকের মাধ্যমে চলছে। স্থানীয় প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে এই অঞ্চলে জনগণের অভিযোগ ও সমস্যা সমাধানে কাঙ্ক্ষিত গতি নেই। এমন অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনই হতে পারে কার্যকর সমাধান।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ স্থানীয় সরকার বিভাগের সব পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণের সমন্বয়ে উদ্ভূত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তা মোকাবিলা করা সম্ভব।’

দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক দুর্বলতা সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোর কার্যক্রমকে স্থবির করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে নগর পরিকল্পনা, পরিবহন ব্যবস্থা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক সেবা ব্যাহত হবে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান না নিলে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর জনগণের আস্থা দুর্বল হতে থাকবে।’

প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পাশাপাশি নাগরিক মনোভাব ও রাজনৈতিক আচরণের পরিবর্তনের ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের জনগণ উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে। কিন্তু এখনো কিছু রাজনৈতিক নেতা দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন, যা জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই রাজনৈতিক নেতাদের আরও দায়িত্বশীল ও মার্জিত হওয়া প্রয়োজন।’

সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনের অনিশ্চয়তা জনসাধারণের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনের মাধ্যমে যদি স্থানীয় প্রতিনিধিরা দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তাহলে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা গতিশীল হবে এবং উন্নয়নের ধারা ত্বরান্বিত হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান তোফায়েল আহমেদ। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম তারিকুল আলম।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে