রমজানে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট দুর করতে

এফএনএস : | প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৪৬ পিএম
রমজানে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট দুর করতে

অনেক জায়গায় দিনের বেলায় গ্যাস থাকছে না। রান্নার চুলা জ্বালাতে রাতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। দেশে গ্যাসের উৎপাদন টানা কমছে। গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে বিদ্যুৎ ও শিল্প খাত। আমদানি করেও চাহিদামতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না। তাই রেশনিং করে (এক খাতে কমিয়ে, আরেক খাতে বাড়ানো) পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে বিদ্যুৎ ও শিল্প খাত। এতে আবাসিক খাতের অনেক গ্রাহক দিনের বেশির ভাগ সময় গ্যাস পাচ্ছেন না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পবিত্র রমজান মাসেও ভোগাতে পারে রান্নার চুলা। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্র বলছে, দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ পেলে মোটামুটি চাহিদা মেটানো যায়। এখন সরবরাহ হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৬৫ কোটি ঘনফুট। রমজান মাসে এটি বেড়ে ২৮০ থেকে ২৮৫ কোটি ঘনফুট হতে পারে। বিগত বছরে একই সময়ে গ্যাসের সরবরাহ প্রায় একই পরিমাণ ছিল। তবে এবার বিদ্যুৎ খাতে গত বছরের চেয়ে বাড়তি সরবরাহ করা হবে। দেশে একসময় দিনে ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হতো। ২০১৮ সালের পর থেকে উৎপাদন কমতে থাকে। ঘাটতি পূরণে এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকে যায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। নতুন গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানোয় তেমন জোর দেয়নি তারা। গত বছরও দিনে গ্যাস উৎপাদিত হতো ২০০ থেকে ২১০ কোটি ঘনফুট। উৎপাদন কমে এখন ১৯০ কোটি ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে। আর আমদানি করা এলএনজি থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ কোটি ঘনফুট। রমজান মাসে বাড়তি এলএনজি আমদানি করে দিনে অন্তত ৯০ কোটি ঘনফুট সরবরাহের পরিকল্পনা নিয়েছে পেট্রোবাংলা। যখন গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট বিশেষ কোনো খাতে থাকে, অন্য খাতে সরবরাহ কিছুটা কমিয়ে সামাল দেওয়া যায়। কিন্তু সংকটটা সব খাতে বিস্তৃত থাকলে আর সামাল দেওয়ার সুযোগ থাকে না। বহু বছর ধরেই দেশে গ্যাসের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে এক খাতে সরবরাহ কমিয়ে অন্য খাতে বাড়ানোর কৌশল নিয়েছিল সরকার। বর্তমানে পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে কোনো হিসাব-নিকাশই মিলছে না। প্রতিবছরই গ্যাস-বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন কমছে। জনজীবন ও অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বক্তব্যে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এসি না চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আশা করি, এসি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হলে কিছুটা বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। কিন্তু তাতে রোজায় যে বাড়তি বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে, সেটা পূরণ হবে কি? গ্যাস-বিদ্যুৎ নিয়ে অতীত সরকারের ভুলনীতি থেকে বেরিয়ে এসে অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর ও টেকসই পদক্ষেপ নিতে হবে। ঢাকার বাসাবাড়িতে গ্রাহকেরা নিয়মিত বিল পরিশোধ করেও কেন গ্যাস পাচ্ছেন না, সেই প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজতে হবে। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও গ্যাস অপচয় রোধে জোরালো ব্যবস্থা নিতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে