স্ত্রী-মাসহ সাঈদ খোকনের ৯০ কোটি টাকার বিনিয়োগ অবরুদ্ধ, জব্দ একাধিক বাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৩১ পিএম
স্ত্রী-মাসহ সাঈদ খোকনের ৯০ কোটি টাকার বিনিয়োগ অবরুদ্ধ, জব্দ একাধিক বাড়ি
সাঈদ খোকন-ফাইল ছবি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও ঢাকা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন, তার স্ত্রী ফারহানা সাঈদ এবং মা শাহানা হানিফের নামে থাকা ৯০ কোটি টাকার পারপিচ্যুয়াল বন্ড হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি গুলশানে একটি ১৪ তলা ভবন, বনানীতে দুটি বাড়ি এবং বারিধারায় থাকা জমিসহ একাধিক সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান আদালতে করা আবেদনে জানান, সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবগুলোতে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়রসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।

দুদকের তদন্তে উঠে আসে যে, সাঈদ খোকন তার দাপ্তরিক ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দেশে ও বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেড পরিচালিত তিনটি হিসাবের মাধ্যমে সিটি ব্যাংকের পারপিচ্যুয়াল বন্ডে তার, তার স্ত্রী এবং মায়ের নামে ৯০ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এই বিনিয়োগ যাতে হস্তান্তর বা লেনদেন করা না যায়, সে জন্য আদালত তা অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে।

এর আগে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের ৭৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দেন। এছাড়া, গত ২৩ ডিসেম্বর আদালত সাঈদ খোকন, তার স্ত্রী, মা ও ভাইয়ের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

সাঈদ খোকন অবিভক্ত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে। ২০১৫ সালে তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। তবে পরবর্তী মেয়াদে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৬ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়। দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তার ক্ষমতা ব্যবহার করে অর্জিত সম্পদ নিয়ে আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান প্রয়োজন।

দুদকের অনুসন্ধান ও আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আদালতের এই আদেশের পর, সম্পদ হস্তান্তর বা বিক্রি করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। পাশাপাশি, তদন্তের পর তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক মামলা দায়ের করা হতে পারে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে