ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সভাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার নির্ধারিত সমাবেশস্থলের পেছন থেকে তিনটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিএনপির দুই গ্রুপ একই স্থানে সভা আহ্বান করায় সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, আশুগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার আড়াইসিধা কাদির ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি সভা করার অনুমতি চেয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি আবেদন করে।
অন্যদিকে, ২০ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে ও একই দিনে আড়াইসিধা ইউনিয়ন বিএনপি কর্মী সভার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। এতে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ইউনিয়ন বিএনপির মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ইতোমধ্যে সভাস্থলে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছিল, যা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বুধবার রাতে ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা মঞ্চ তৈরিতে বাধা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বৃহস্পতিবার সকালে কাদির ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পেছন থেকে তিনটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে আশুগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তাকিম পাটোয়ারি নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
তিনি জানান, ‘আড়াইসিধা স্কুলের সামনে পরিত্যক্ত অবস্থায় তিনটি ককটেল পড়ে থাকার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম চালাই। ইতোমধ্যে সেনা সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে, তারা এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
পুলিশের উদ্ধারের পর সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল টিম ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারকৃত তিনটি ককটেল নিষ্ক্রিয় করে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ককটেল উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দোষীদের খুঁজে বের করতে কাজ চলছে।
এদিকে, বিএনপির দুই গ্রুপের সভাকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে উভয় পক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সভার কারণে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। সংশ্লিষ্ট মহল ধারণা করছে, ককটেল উদ্ধারের ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে, যা সভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ সৃষ্টির চেষ্টার অংশ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রশাসন সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং উভয় গ্রুপকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছে।