সরাইলে অবৈধ পন্থায় টিসিবি’র পণ্য মজুদ, ব্যবসায়ির ১ মাসের কারাদন্ড

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) :
| আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৪৮ পিএম | প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৪:৩৬ পিএম
সরাইলে অবৈধ পন্থায় টিসিবি’র পণ্য মজুদ, ব্যবসায়ির ১ মাসের কারাদন্ড

 ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে অবৈধ পন্থায় ৩৭ বোতল টিসিবি’র তেল মজুদ রেখে বিক্রির দায়ে পলাশ (৪০) নামের এক ব্যবসায়িকে গ্রেপ্তার করেন সরাইল থানার পুলিশ। তেল উদ্ধারের পর ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ওই ব্যবসায়িকে ১ মাসের কারাদন্ড সাথে ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছেন ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মোশারফ হোসাইন। বৃহস্পতিবার উপজেলার চুন্টা বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। একটি সিন্ডিকেটের দ্বারা গরীবের মালামাল নিয়মিত খোলা বাজারে চলে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন একাধিক গ্রাহক।

ইউএনও’র দফতর ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চুন্টাসহ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গরীবের জন্য দেয়া টিসিবির মাল নিয়ে কারসাজি শুরূ থেকেই চলছে। স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও অসৎ ব্যবসায়ি মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। নিজেদের লাভের জন্য টিসিবির ডিলাররাও সিন্ডিকেটের সদস্যদের সহায়তা করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। প্রথম দিকে জাতীয় পরিচয়পত্রে চেয়ারম্যান স্বাক্ষর করে দিলে ডিলার মালামাল দিত। তখন কার মাল কে নিয়েছে? কোথায় গিয়েছে? বলা মুশকিল ছিল। অনেককে ৪-৫ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে খালি হাতে ফেরত যেতেও দেখা গেছে। স্বচ্ছতা আনতে পরবর্তীতে সুবিধা ভোগিদের জন্য করা হয়েছে কার্ড। এখন কার্ড ছাড়া মাল দেওয়া হবে না। তারপরও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। প্রত্যেক এলাকায় এক শ্রেণির লোক টিসিবির মাল নিয়ে অনিয়ম করেই যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধি অসৎ ব্যবসায়ি আর ডিলারের যোগসাজসে গরীবের এই মাল নিয়মিতই খোলা বাজারে চলে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চুন্টা বাজারের ব্যবসায়ি কানাই পালের ছেলে পলাশ সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় টিসিবির তেলের দিকে দৃষ্টি যায়। ১ বোতল তেল পেতেই যেখানে গ্রাহককে হিমশিম খেতে হয়। সেখানে পলাশ তার মুদির দোকানে ৩৭ টি তেলের বোতল মজুদ করেন। পরে চড়া দামে বিক্রিকালে বুধবার রাতে বিষয়টি জেনে যান ইউএনও মো. মোশারফ হোসেন। রাত প্রায় ৯টার দিকে ইউএনও অভিযান চালান পলাশের দোকানে। হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় পলাশ। তার দোকানে মিলে মজুদকৃত টিসিবির ৩৭ বোতল তেল। দীর্ঘদিন ধরে এই অনৈতিক ব্যবসা করে স্থানীয় দরিদ্র অসহায় লোকদের বঞ্চিত করার অভিযোগে স্থানীয়রা তার উপর চরমভাবে ক্ষুদ্ধ হন। পলাশকে মারধর করতে বারবার তেড়ে আসছিলেন স্থানীয়রা। প্রশাসনের সহাতায় জনতার রোষানল থেকে রক্ষা পান পলাশ। পুলিশ প্রথমে পলাশকে আটক করেন। পরে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে অবৈধপন্থায় নিজের দোকানে টিসিবির তেল মজুদ করে বিক্রির দায়ে ভ্রাম্যমান আদালত দন্ডবিধির ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় পলাশকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গরীব অসহায় লোকজনের কম মূল্যে সরকারি বরাদ্ধের তেল এ গুলি। সুযোগ করে সেই তেল অবৈধপন্থায় সংগ্রহ করে ওই দোকানে মজুদ করতেন ব্যবসায়ি পলাশ। পরে বিক্রি করতে চড়া মূল্যে। বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে