চট্টগ্রামে ‘মব’ বানিয়ে পুলিশকে মারধর

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে গাঁজা খেতে বাধা দেওয়ায় মোবাইল ডিউটিতে থাকা এক পুলিশ কমর্র্কতাকে পরিকল্পিত ‘মব’ তৈরি করে মারধর করেছে সংঘবদ্ধ একটি সন্ত্রাসী চক্র। ওই কর্মকর্তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ছাড়াও ছিনিয়ে নেওয়া হয় ওয়্যারলেস সেট। শুক্রবার রাত ১১টায় এই ঘটনা ঘটেছে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের চরপাড়া ঘাটের কাছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে স্থানীয় কিছু যুবক নিয়মিতই গাঁজা সেবন করে। রাত ১০টার দিকে মোবাইল ডিউটিতে থাকা পতেঙ্গা থানার এসআই ইউসুফ আলীর চোখে পড়ে কিছু যুবক গাঁজা সেবন করছে। সামনে এগিয়ে যুবকদের তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর একপর্যায়ে যুবকরা নিজেদের ভুল স্বীকার করে মাফ চাইলে সতর্ক করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর ভুল স্বীকার করে মাদকাসক্ত যুবকের দল ঘটনাস্থল ছেড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই তারা আরও বেশকিছু লোককে সঙ্গে করে পতেঙ্গা সৈকতে ফিরে আসে। এ সময় এসআই ইউসুফ তার সঙ্গে থাকা টহল গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে তার আগেই যুবকরা এসে তাকে প্রশ্ন করেÑ ‘আপনি তো ভুয়া পুলিশ। আপনার আইডি কার্ড কই?’ উত্তরের অপেক্ষা না করেই যুবকেরা মুহূর্তেই ঝাঁপিয়ে পড়ে এসআই ইউসুফের ওপর। তাকে এ সময় এলোপাতাড়ি মারধরও করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এসআই ইউসুফকে কাঁদতে দেখা যায়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলছিলেন, ‘আমার মোবাইল মানিব্যাগ ওয়্যারলেস সব নিয়ে গেছে ওরা।’তার গায়ে আঘাতের লাল লাল ছোপ দেখা গেছে। চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে এসআই ইউসুফ বলছিলেন, ‘আমার মানসম্মান সব গেছে।’ ভিডিওর একপর্যায়ে অচেনা কিছু যুবককে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ইউসুফের পকেটে ঢ়ুকিয়ে যেতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে পতেঙ্গা থানার ডিউটি অফিসারকে গণমাধ্যম কমীরা জিজ্ঞাসা করলে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম বলতে পারেননি। জড়িত সবাইকে আটকের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত,  ৩৬তম ব্যাচের এসআই ইউসুফ আলী তার চাকরি জীবনের শুরু থেকে ছিলেন নৌ-পুলিশে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি নৌ-পুলিশের বাইরে তার প্রথম পোস্টিং হয় চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) পতেঙ্গা থানায়। ফলে স্থানীয় অপরাধীচক্র সম্পর্কে তার ধারণাও ছিল না। এস আই ইউসুফ সহজ-সরল প্রকৃতির লোক বলে জানান তার সহকর্মীরা।