পবিত্র রমজানে অন্যান্য পণ্যের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু চাহিদা মতো ভ্যেজ্য তেল পাচ্ছে না ক্রেতারা। তেলের জন্য নগর জুড়ে হাহাকার চলছেই। চাহিদা মতো তেল পেতে হয়রানির শিকারও হতে হচ্ছে ভোক্তাদের। ওই তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য সামগ্রী কেনার শর্ত জুড়ে দিচ্ছে অসাধু সরবারহকারীরা। এমন অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীরা।
খাতুনগঞ্জের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, তেল নিয়ে আমরা অনেক কষ্টে আছি। কোম্পানিকে ৫ কার্টন বললে ১ কার্টন দেয়। আবার তেলের সাথে যৌতুক দেয়; চিনিগুঁড়া নিতে হবে, সরিষার তেল, নুডুলস কিংবা অন্যান্য পণ্য নিতে হবে। পাহাড়তলী এলাকার আনোয়ার নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, এবার রমজানের শুরু থেকে মোটামুটি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যেমন- ছোলা, ছিরা, খেজুর, চিনির দাম নিয়ন্ত্রণেই আছে। শুধু তেলটাই নিয়ে তেলবাজি চলছেই। চাহিদামতো তেল আমরা খুচরা ব্যবসায়ীরা পাচ্ছি না। ক্রেতারা তেলের জন্য দোকানে দোকানে ঘুরছেন।
উক্ত সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, কোম্পানি আমাদের সঙ্গে যা তা করছে। এভাবে চলতে থাকলে তো আমরা ব্যবসা করে দুইবেলা খেতে পারব না। সরকারকে এখানে হস্তক্ষেপ করতে হবে। আবার কোথাও কোথাও তেলের বোতলের গায়ে মূল্য তালিকা মুছে অতিরিক্ত দামে ক্রেতাদের কাছে তেল বিক্রি করার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য ক্রেতারা মনে করেন, যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তেল সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে।
এদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ফয়েজ উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছেন, বর্তমানে একটি বিষয় শোনা যাচ্ছে যে, বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা এখানে এসে সব প্রতিষ্ঠানে দেখেছি তেল পর্যাপ্ত আছে। সরবরাহকারীরা পর্যাপ্ত তেল দিচ্ছে না, খুচরা ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি এমন করে থাকে তাহলে আমরা বিক্রেতাদের বলব, আপনারা আমাদের জানান। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। একটু আগেও একজন এ অভিযোগ করেছে। আমরা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা চেয়েছি। তারা দিতে পারেনি। এটা তারা কেন দিতে পারেনি বা কেন দেয়নি আমি জানি না।
ওদিকে গত রবিবার দুপুরে চট্টগ্রামে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি এবং বাড়তি দামে বিক্রি করার অভিযোগে দুই মুদির দোকানকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তাধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। শহরের চেরাগী পাহাড় মোমিন রোড এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে শরীফ স্টোর এবং স্বপন এন্টারপ্রাইজ নামে দুটি দোকানকে মোট ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ভোক্তাধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ উদঘাটন করেন।