বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের দলিল সংরক্ষণের আহ্বান ড. ইউনূসের

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২ মার্চ, ২০২৫, ০৬:৪৮ পিএম
বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের দলিল সংরক্ষণের আহ্বান ড. ইউনূসের

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, “দেশের মানুষের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব ধরনের নৃশংসতার দলিল সংরক্ষণ করা জরুরি। এটি করা না হলে সত্য জানা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।”

রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ হুমা খানের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

বৈঠকে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন যে, শাপলা চত্বরে আন্দোলনকারীদের দমন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের নির্যাতন, এবং বছরের পর বছর ধরে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যথাযথভাবে ডকুমেন্ট করা প্রয়োজন।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস বলেন, “জাতিসংঘ এই বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দিতে এবং বাংলাদেশের জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এটি সুস্থতা ও সত্য প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া।”

ড. ইউনূস জাতিসংঘের মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কিত তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য সংস্থাটিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “জাতিসংঘ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা খুবই সময়োপযোগী। এটি সহজ কাজ ছিল না, তবে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

বৈঠকে গোয়েন লুইস জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্ক আগামী ৫ মার্চ জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন।

এছাড়া, তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আসন্ন বাংলাদেশ সফর রোহিঙ্গা সংকটকে নতুনভাবে বিশ্ব-দরবারে উপস্থাপন করবে, বিশেষ করে যখন রোহিঙ্গা ত্রাণ সহায়তা ক্রমাগত কমে আসছে।

তিনি বলেন, “আমরা অর্থায়ন পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। শুধুমাত্র খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতেই প্রতি মাসে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এর সঙ্গে যোগ হয় অন্যান্য মৌলিক চাহিদার ব্যয়।”

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করবেন। এই সফরে তিনি রোহিঙ্গা সংকটসহ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের এই সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ড. ইউনূসের আহ্বান অনুযায়ী, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দলিল সংরক্ষণ করা হলে ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে