জীবনে সুখী হতে জরুরি যে ১০টি অভ্যাস

এফএনএস লাইফস্টাইল | প্রকাশ: ৪ মার্চ, ২০২৫, ০৮:৪৭ এএম
জীবনে সুখী হতে জরুরি যে ১০টি অভ্যাস

একজন সুখী ও আশাবাদি মানুষ যেকোনো পরিস্থিতিতে সাহস ধরে রেখে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার যোগ্যতা রাখেন। যেকোনো ক্ষেত্রেই পজেটিভ দিকটায় মনোনিবেশ করা সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বড় একটি ভূমিকা রাখে। তবে সবসময় নিজের ভেতর সুখ ধরে রাখাটাও বড় ধরনের একটা চ্যালেঞ্জ। আসুন জেনে নেই, জীবনে সুখী হতে গেলে যে অভ্যাসগুলো রপ্ত করতে হবে আপনাকে! 

কৃতজ্ঞ থাকুন:

জীবনে যা পেয়েছেন, তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকুন। জীবনের যা কিছু অর্জন, তা শুধুই আপনার কারণে। আপনি যদি আপনার অবস্থানের প্রতি সন্তুষ্ট না থাকেন, তাহলে আপনার কাজই বাঁধাগ্রস্ত হবে। ফলে ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়বেন আপনি। কাজেই নিজ অবস্থানকে ভালোবাসুন, কৃতজ্ঞ থাকার চেষ্টা করুন নিজের প্রতি। 

আপনার গল্প শেয়ার করুন:

নিজের সাফল্য, বিফলতা তথা জীবনের গল্প অন্যকে জানান, অন্যেরটা জানুন। অনেকেই আছেন যারা শুধু শুনেই যান, অনেকে আছেন যারা শুধু বলেই যান, আবার অনেকে আছেন যারা কিছু জানতেও চান না, শুনতেও চান না। কিন্তু এগুলোর কোনোটাই আপনার জীবনে প্রভাব রাখতে পারবে না, যতক্ষণ না দান-প্রতিদান সমান না হবে। এভাবে গল্প শেয়ারের মাধ্যমে আপনি যেমন নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন, অন্যের কাছ থেকেও শিখতে পারবেন। ফলে নিখুঁত হয়ে উঠবে আপনার কাজ। 

ক্ষমা করুন:

আমাদের সমাজে অনেকেই আছেন, যারা ক্ষমা করার মানসিকতা ধারণ করেন না। তাদের কাছে ক্ষুদ্র অপরাধ বা ভুলও ক্ষমার অযোগ্য। ফলে ধীরে ধীরে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন অন্যের থেকে, নিজ জীবনে একা হয়ে পড়েন। একইভাবে অধীনস্তদেরও কিছু শেখাতে পারেন না। ফলাফল, জীবনে নেমে আসে একাকীত্ব। সুখ পালিয়ে যায় চোখের নিমিষে। 

ভালো শ্রোতা হোন:

একজন ভালো শ্রোতাই পারেন সময়মত অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। শুধু তাই নয়, ভালো শ্রোতা হওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল দ্রুত জ্ঞানার্জন করা যায়। অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করাও হয় এতে। এতে করে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। আত্মবিশ্বাস এবং জ্ঞান আপনার কাজে নিরাপত্তা এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। 

হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করুন:

আমরা যখন কাউকে হিংসা করি, তখন আমরা মূলত নিজেকেই আঘাত করি। ফলে নিজ কাজটা হয়ে যায় দুর্বল। নিজ কাজকে নিখুঁত করতে হলে সেখানে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ জরুরি। কিন্তু আপনি যখন অন্য একজনকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে তার প্রতি মনে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করবেন, তখন আপনি সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করতে পারবেন না। ফলে ধীরে ধীরে মনের সুখ হারানর পাশাপাশি কাজের মানও নিন্ম হয়ে যাবে। 

হাসুন বেশি:

আমরা যখন হাসি, তখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে। হাসলে সেরোটোনিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসরন করে যা মানুষকে সুখী সুখী ভাব এনে দেয়। এধরনের অনুভূতি অনেক কঠিন কাজকেও সহজ করে দেয়। 

ব্যয়াম এবং খাবারে নিয়ম মেনে চলা:

নিয়মিত ব্যয়াম এবং খাবারে নিয়ম মেনে চললে শরীর থাকে ঝরঝরে। আর ঝরঝরে শরীর মনকে রাখে তরতাজা। ফলে কাজে আসে স্পৃহা। দিনে অন্তত পনের মিনিটের জন্য হলেও ব্যয়াম করা উচিত। যদি ব্যস্ততার কারণে ব্যয়াম সম্ভব না হয়, এবং শরীরে সূর্যালোক লাগানর ব্যবস্থা না থাকে সকালে, তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ভিটামিন-ডি উৎপাদক ওষুধ সেবনের ব্যবস্থা নিন। 

ইতিবাচক চিন্তার অনুশীলন করুন:

ইতিবাচক চিন্তা আপনার কাজকে যতখানি সামনে নিয়ে যেতে পারবে, আর কিছুই এতোখানি পারবে না। যদি আজ কোনো ব্যর্থতা আসে, তাহলে ভাববেন না, আপনি সবসময়ই ব্যর্থ। কাল সাফল্য অবশ্যই আসবে। কাজেই নিজের প্রতি ইতিবাচক চিন্তা ধরে রাখুন এবং সকল ক্ষেত্রে বাঁধার কথা মাথায় না রেখে সাফল্যের কথা ভাবুন। সে উদ্দেশ্যেই কাজ করুন। 

আপনার সমস্যার জন্য অন্যকে দোষারোপ বন্ধ করুন:

বাঙালির তিন হাত। ডান হাত, বাম হাত আর অযুহাত। এই অযুহাতের ভাড়া করতে গিয়ে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই নিজ ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে বসি। আবার নিজের অবস্থার জন্য জনগণ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনীতিবিদ, নিজ কর্মস্থলর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর দোষারোপ করে। অথচ নিজ সমস্যাকে নিজেই যদি মোকাবেলা করা হয়, তাহলে এমন অযুহাত কাড়া করার কোনো অবকাশই থাকে না, উপরন্তু নিজের উন্নতিও সম্ভব হয়। ফলে জীবনে বেইতে শুরু করে সুখের হাওয়া। 

অতীতকে কখনোই ভবিষ্যত হিসেবে নেবেন না:

অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হয়, তাকে বুকে ধারণ করে ভবিষ্যতকে নষ্ট করতে নেই। সেই ব্যক্তিই জীবনে সুখী হতে পারে, যে অতীত থেকে নিজ ভুলের শিক্ষা নিয়ে তা আবার দ্বিতীয়বার না করে এবং ভবিষ্যতকে এই শিক্ষার আলোকে উজ্জ্বল করে তোলে।