সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে জামায়াতের দুই কর্মী নিহত

এফএনএস (মোঃ আবদুল ওয়াদুদ; চট্টগ্রাম) :
| আপডেট: ৪ মার্চ, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম | প্রকাশ: ৪ মার্চ, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে জামায়াতের দুই কর্মী নিহত

দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জামায়াতের দুই কর্মীকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এরা হলেন- উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মাহমুদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ছালেক (৩৫)। সোমবার রাতে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় ওই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে তারাবি নামাজের পর জামায়াত নেতা নেজাম উদ্দিনকে এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় প্রতিপক্ষের লোকজন শালিসের কথা বলে কৌশলে নিয়ে যায়। এসময় মোট নয়টি সিএনজিচালিত ট্যাক্সি ও একটি মোটরসাইকেলে করে নেজাম উদ্দিন তাঁর লোকজনসহ সেখানে যান। এরপর স্থানীয় আ’লীগ ক্যাডার মানিকের লোকজন তাদেরকে দেখে স্থানীয় মসজিদ থেকে মাইকে ‘ডাকাত আসছে, ডাকাত আসছে’ বলে ঘোষণা দেয়। এই খবর পেয়ে এলাকাবাসী কোন কিছু না বুঝার আগেই সংঘবদ্ধ হয়ে নেজাম ও তার সঙ্গীদের ঘিরে ফেলে। 

এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়। পুরো ছনখোলা এলাকায় তখন অবর্ণনীয় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর অবস্থা বেগতিক দেখে নেজাম ও তার সঙ্গীরা পালানোর সময় গণপিটুনিতে উপরোক্ত দুইজন নিহত হয়। আহত হয় আরো পাঁচজন। পিটুনির সময় তারা বার বার জামায়াত নেতা পরিচয় দেওয়ার পরেও রক্ষা পায়নি। তবে গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, আ’লীগ ক্যাডার মানিক পলাতক থাকলেও তাঁর সহযোগীরা এলাকায় আছে। কিছুদিন আগে জামায়াত কর্মীরা মানিকের গরুর খামার এবং বাড়ীতে হামলা করে। ওই ঘটনার জের ধরে গণপিটুনির উক্ত ঘটনা ঘটে।

তবে জামায়াতে ইসলামীর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোছেন সাংবাদিকদের বলেন, নিহত ব্যক্তিরা জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। একটি সালিস বৈঠকের কথা বলে তাঁদের এওচিয়া এলাকায় ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দুজনের মাথায় পর্যায়ক্রমে আঘাত করা হয়। তারা কোন অপরাধের সাথে জড়িত নয়।

এদিকে  সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। তাঁদের গণপিটুনি দিয়ে কেন হত্যা করা হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে পুরো বিষয়টির তদন্ত চলছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে