দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার এঁওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় গত ৩ মার্চ সোমবার রাত ১০ টায় জামায়াতের দুই কর্মীকে শালিশ বৈঠকের নামে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা হলেন, উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও আবু ছালেক (৪৪)। এ ঘটনায় আহত হয় আরো ৫ জন। তারা নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নিহতদেরকে গতকাল সন্ধ্যায় জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে। জানাজার নামাজে হাজার হাজার লোক অংশ গ্রহন করে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতকানিয়া উপজেলা শাখার আমীর অধ্যাপক মাওলানা কামাল উদ্দিন, সেক্রেটারি তারেক হোসাইন, কাঞ্চনা ইউনিয়ন শাখার আমীর মাওলানা আবু তাহের, সেক্রেটারি জায়েদ হোসেন, এঁওচিয়া ইউনিয়ন শাখার আমীর আবু বক্বর, সেক্রেটারি ফারুখ হোসাইন এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছেন।
সাতকানিয়া উপজেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আয়ুব আলী কতৃক প্রেরিত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সোমবার রাতের ঘটনা একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা গ্রামটি বহু আগে থেকেই সন্ত্রাস কবলিত এলাকা। এওচিয়া ইউনিয়ন এর সাবেক চেয়ারম্যান ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী নজরুল ইসলাম মানিক ছনখোলা এলাকার পাহাড়, পাহাড়ি গাছ ও ইটভাটা সমুহ নিয়ন্ত্রণে নিতে একাধিকবার সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
এলাকার মানুষ তার অত্যাচার নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে তাকে বয়কট করে। তৎকালীন আওয়ামী সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতার কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনি। বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী হাসিনার পতনের পর সে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করলেও তার বাহিনী এখনো বহাল তবিয়তে অবস্থান করছে। তার ভাই হারুন এবং মমতাজের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এই সন্ত্রাসীরা এখনও নানা অপকর্মে জড়িত। সোমবার রাতে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী দূঃশাসনে নির্যাতিত ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেককে একটি সামাজিক বিচারের কথা বলে ডেকে এনে মাইকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ডাকাত আখ্যা দিয়ে গণপিটুনির নামে চেয়ারম্যান মানিকের নির্দেশে তার ভাইদের পরিকল্পনায় কুপিয়ে দুজনকে জঘন্যতম কায়দায় হত্যা করেছে যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন। একইভাবে বিগত ২০১৬ সালে মানিক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কাঞ্চনার জামায়াত কর্মী শহীদ আবুল বশরকেও নির্মমভাবে ছনখোলাতে হত্যা করা হয়েছিল।
নেতৃবৃন্দ বলেন - অবিলম্বে চিহ্নিত খুনীদের গ্রেফতার, ঘটনার গডফাদারদের বিরুদ্ধে মামলা ও বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত না করে আসল হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানিয়েছেন জামায়াত নেতৃবৃন্দ।