কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরবর্তী সাগরে মাছ ধরার সময় মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে আটক হওয়া ৫৬ বাংলাদেশি জেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।
জেলেদের আটকের ঘটনাটি ঘটে বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ছয়টি ট্রলারসহ ৫৬ জেলে মিয়ানমারের জলসীমায় প্রবেশ করেন। এ সময় মিয়ানমার নৌবাহিনী তাদের আটক করে। আটকের প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে ফিরে আসেন।
টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মান্নান জানান, মিয়ানমার নৌবাহিনী জেলেদের ছেড়ে দিলেও তাদের মাছ ও জাল ফেরত দেয়নি। তিনি বলেন, "জেলেরা নিরাপদে ফিরে এসেছেন, তবে তাদের উপার্জনের মাধ্যম মাছ ও জাল মিয়ানমার নৌবাহিনীর কাছে রয়ে গেছে।"
টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "মিয়ানমার নৌবাহিনী আটক করা জেলেদের ছেড়ে দিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে টেকনাফে ফিরে এসেছেন।"
আটক হওয়া ছয়টি ট্রলারের মালিকদের মধ্যে রয়েছেন টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার মো. বশির আহমদ, মো. আমিন, নুরুল আমিন, আব্দুর রহিম এবং মো. শফিক। মো. শফিকের মালিকানাধীন দুটি ট্রলার রয়েছে।
ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, "বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম সাগরে মাছ ধরার সময় ছয়টি ট্রলার মিয়ানমারের জলসীমায় প্রবেশ করে। এ সময় মিয়ানমার নৌবাহিনী জেলেদের আটক করে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।"
এই ঘটনায় স্থানীয় জেলেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় মাছ ধরার সময় প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে। জেলেরা নিরাপত্তা ও সহযোগিতা চেয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে আটক হওয়া জেলেদের নিরাপদে ফিরে আসায় তাদের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে মাছ ও জাল ফেরত না পাওয়ায় জেলেদের আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।