বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে বিনিয়োগ, জ্বালানি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং অভিবাসী কল্যাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা।
রোববার (৯ মার্চ) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কুয়েতের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আলী তুনিয়ান আব্দুল ওহাব হামাদাহ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে তাঁরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা কুয়েতি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং আগামী ৭ থেকে ৯ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে হালাল খাদ্য শিল্পের মতো খাতে। বৈশ্বিক হালাল খাদ্যের বাজার ব্যাপক এবং এখানে তরুণ উদ্যোক্তাদের যুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।"
বৈঠকে কুয়েত থেকে বাংলাদেশে অপরিশোধিত তেল আমদানি বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কুয়েতের সঙ্গে জ্বালানি খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি কুয়েতকে বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে একটি আধুনিক তেল শোধনাগার স্থাপনের আহ্বান জানান এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনা অনুসন্ধানের পরামর্শ দেন।
কুয়েতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের জন্য উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। তিনি কুয়েতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং সেখানে কর্মরত বাংলাদেশি সামরিক সদস্যদের পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন।
কুয়েতের রাষ্ট্রদূত হামাদাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ আহমেদ আবদুল্লাহ আল-আহমদ আল-সাবাহ এবং কুয়েতের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, "আমরা দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।"
বৈঠকে উভয় পক্ষ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, "আমাদের অংশীদারিত্ব পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। আমরা বাণিজ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
বাংলাদেশ-কুয়েত সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার এ প্রতিশ্রুতি দুই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।