পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়ন কৃষকদলের কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এনিয়ে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে কমিটি থেকে ১০ জন পদত্যাগ করেছেন।
সম্প্রতি চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের কৃষকদলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করে উপজেলা কৃষকদল। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে ওই ইউনিয়নের কুমারগাড়া গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলাম,সহসভাপতি মোঃ বাবু মিয়া,সাংগঠনিক সম্পাদক নটাবাড়িয়া গ্রামের মোঃ আঃ মোমিন ও প্রচার সম্পাদক দোদারিয়া গ্রামের আলহাজ হোসেন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু ওই ইউনিয়নের বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠণের নেতা-কর্মীদের দাবি কমিটির সভাপতি,সহ-সভাপতি,সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদক আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সভাপতি নজরুল ইসলামের বাড়িতে নৌকার অফিস ছিলো। বিগত ১৬ বছরে তারা কোনদিন বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠণের কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি। তারা সবসময় আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠণের নেতা-কর্মীরা কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত করে আওয়ামী লীগের সময় রাজপথে আন্দোলনে থাকা কর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠণের দাবি জানিয়েছেন। বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক মোঃ আফছার আলী,যুগ্ম আহবায়ক মোখলেসুর রহমান,যুগ্ম আহবায়ক নজরুল ইসলাম,ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আলামিন শেখ,ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমুল হোসেনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি ও নেতৃবৃন্দ কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠণের জন্য পাবনা জেলা কৃষক দলের সভাপতি ও সম্পাদকসহ উপজেলা কৃষকদলের নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আওয়ামী লীগ কর্মীদের দিয়ে কৃষকদলের কমিটি গঠণ করার প্রতিবাদে গঠিত কমিটির ১০জন নেতা পদত্যাগ করেছেন। জেলা ও উপজেলা কমিটির কাছে পদত্যাগকারীরা হলেন,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ,দপ্তর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম,সমাজকল্যাণ সম্পাদক জনি হোসেন,যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মহসিন আলী,সহ দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম,সহ ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন,সহ শিক্ষা ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক অলিফ হোসেন.সহ যোগাযোগ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম,সদস্য আমিরুল ইসলাম ও আক্কাস আলী।
এদিকে গঠিত কমিটির সভাপতিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করায় নবগঠিত কমিটির উদ্যোগে শনিবার (৮ মার্চ) প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুমারগাড়া খেয়াঘাট চত্বরে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতি নজরুল ইসলাম চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন,আমি কখনও আওয়ামী লীগের সাথে ছিলাম না। আমি ছাত্রদল,স্বেচ্ছাসেবক দল করেছি। আমি আগে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম,এখনো আছি। ভবিষ্যতেও থাকবো। যারা আমা বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন,তারাই বরং আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির’র যুগ্ম আহবায়ক ও ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন,তারা আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। সভাপতি আরো বলেন,আমার প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছে। আমি আওয়ামী লীগ করি এটা প্রমাণ করতে পারলে আমি পদত্যাগ করবো।
অপরদিকে গঠিত কমিটি বিলুপ্ত করে আন্দোলনে সংগ্রামে থাকা নেতা-কর্মীদৈর নিয়ে কমিটি গঠণ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠণের নেতাকর্মীরা। রোববার (৯ মার্চ) সকালে কুমারগাড়া খেয়াঘাট চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন,বিলচলন ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা মোঃ নজরুল ইসলাম,আঃ মতিন,সেতার আলী,জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যরা। তারা অবিলম্বের কৃষকদলের ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত করার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারী দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আজাদুল ইসলাম বলেন,অভিযোগ সত্য নয়। কমিটিতে না আসতে পেরে হয়তো তারা এ ধরণের অভিযোগ করেছে। তারা যদি প্রমাণ করতে পারে নজরুল বা অন্য কেউ আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত,তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।