চিলমারীতে রাস্তার কাজে ধিরগতি, দুর্ভোগে জনজীবন

এফএনএস (মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম সিদ্দিক; চিলমারী, কুড়িগ্রাম) : : | প্রকাশ: ১১ মার্চ, ২০২৫, ০১:১৭ পিএম
চিলমারীতে রাস্তার কাজে ধিরগতি, দুর্ভোগে জনজীবন

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র মাটিকাটা মোড় হতে হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতুগামী ৫.২৩০কি.মি. রাস্তার কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার মাটিকাটা মোড় থেকে কলেজ মোড় এলাকা পর্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ডব্লিউএমএম করায় রাস্তাটি ধুলার রাস্তায় পরিণত হয়েছে। এতে ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসীর জনজীবন। ক্ষমতার দাপটে কাজ হাতিয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। 

জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন পাঁচপীর বাজার থেকে চিলমারী উপজেলা হেড কোয়ার্টার সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১হাজার ৪৯০মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প (৩য় সংশোধিত) এর আওতায় সড়ক উন্নয়নকরণ কাজ বাস্তবায়ন শুরু হয়। এ লক্ষে চিলমারী উপজেলা হেড কোয়ার্টার মাটিকাটা মোড় হতে পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইঃ ১২২০মি.-৫২৩০ মি.৪০১০মি.) উন্নয়নকরণ এবং চিলমারী উপজেলা হেড কোয়ার্টার হতে পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইঃ ০০মি.-১২২০মি. ১২২০মি.) মিলে মোট ৫.২৩০কি.মি. এলাকা উন্নয়নের ঠিকাদারী চুক্তি সম্পাদিত হয় ২০২৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী। যার চুক্তি মূল্য ছিল ১০কোটি ৩৩লক্ষ ২হাজার ৮৩২টাকা। কাজ নেয়ার সময় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অতিমাত্রায় নিম্ন দর দাখিল করে নাটোর এলাকার মীর হাবিবুল আলম এর নামের লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজটি বাগিয়ে নেন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের এপিএস রাশেদুল ইসলাম রাশেদ। যেটি ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ তারিখে শুরু হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখে শেষ হওয়ার কথা ছিল। হরিপুর-চিলমারী সেতুর সংযোগ রাস্তাটি নতুন মাটির হওয়ায় নতুন রাস্তার প্রায় ২কি.মি. এলাকায় রাস্তার দুই ধারে প্যালাসাইটিং ও প্রায় ৭০০মিটার এলাকায় সিসি ব্লক দেয়াসহ মাটির অংশে রাস্তার উপরে বক্স কাটিং, স্যান্ড ফিলিং, সাববেজ, ডব্লিউএমএম এবং কার্পেটিং ও পাকা অংশের ২ পার্শ্বে ৩ফুট করে বাড়িয়ে তাতে মাটির রাস্তার ন্যায় সকল কার্যাদীসহ ডব্লিউএমএম ও কার্পেটিং করার কথা থাকলেও কাজের মেয়াদ শেষে মাটির রাস্তার অংশের মাত্র ২কি.মি. এলাকায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সামান্য কাজ করা হয়েছে। রাস্তাটির মাটিকাটা মোড় হতে কলেজ মোড় পর্যন্ত এলাকায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ডব্লিউবিএম এর কাজ করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় রাস্তাটি বর্তমানে জনগণের চরম ভোগান্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ওই রাস্তাটি যেন ধুলার রাস্তায় পরিণত হয়েছে। কাজের মেয়াদ শেষ হলেও কাজের অগ্রগতি না থাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওই ৫.২৩০কি.মি. রাস্তা উন্নয়ন কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতার দাপটে কাজ হাতিয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। সরেজমিনে রাস্তাটি ঘুরে দেখা গেছে, শহরের প্রাণকেন্দ্র মাটিকাটা মোড় হতে কলেজ মোড় পর্যন্ত এলাকা ধুলাময় রাস্তায় পরিনত হয়েছে। ধুলার কারনে হাট-বাজার এবং অফিসগামী মানুষজন মুখে কাপড় দিয়ে চলাচল করছে। রাস্তার দুই ধারে থাকা দোকান ও বাড়ী-ঘরের মানুন ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। উপজেলার শেষ প্রান্তে দুই থানার মোড় এলাকায় প্যালসেটিংয়ের জন্য (গাইড ওয়াল) রাস্তার নিচে কাজ করতে দেখা গেছে ঠিকাদের জনবলকে রাস্তার পাশ্বের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, বাবু মিয়া, লাল মিয়াসহ অনেকে জানান, বর্তমানের রস্তায় ধুলায় দোকানের পন্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রমজান মাসে রাস্তাটিতে এরকম ধুলা থাকায় রোজাদার পথচারীসহ সাধারন মানুষ মারাত্মক কষ্ট ভুগছেন। প্রয়োজনে ঠিকাদার পরিবর্তন করে রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন করার কথা বলেন তারা। উপজেলা মোড়ের কম্পিউটার ব্যবসায়ী সোহান জানান, ঈদের আগে রাস্তার কাজ শেষে করা না হলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে এবং রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যবসা বানিজ্যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। কাজটির ঠিকাদার রাশেদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (চঃদাঃ) মোঃ জুলফিকার আলী জানান, রাস্তার ধুলা বন্ধ রাখতে নিজ উদ্যোগে কয়েকদিন পানি দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। মাটিকাটা মোড় থেকে কলেজমোড় পর্যন্ত রাস্তাটি কার্পেটিং অথবা প্রাইমকোড দেয়ার ব্যবস্থা করতে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে