ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের ৩ দিন ব্যাপি কৃষি প্রযুক্তি মেলা সাঁঝের শেষ নেই। কিন্তু কাজের ফলাফল শুন্য। উদ্ধোধনী দিনই ১০ টি ষ্টলের মধ্যে অধিকাংশ ষ্টলই নেই দায়িত্বশীল কোন লোক। ডিসপ্লে গুলো চকচক করলেও জনমানব শুন্য ষ্টল গুলো খাঁখাঁ করছে। পরামর্শ কেন্দ্রে নেই পরামর্শ দেয়ার কেউ। হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন চাষীরা। ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে সরকারী টাকায় আয়োজিত মেলার মূল লক্ষ ও উদ্যেশ্য। তবে লোক না থাকায় পরামর্শ কেন্দ্র থেকে কেউ ফিরে গিয়ে থাকলে আমি ক্ষমা প্রার্থী বললেন মেলার দায়িত্বে থাকা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
সরজমিন অনুসন্ধান ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিসটেন্স প্রজেক্টের (ফ্রিপ) অর্থায়নে সরাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে ও বাস্তবায়নে তিনদিন ব্যাপি এই মেলার উদ্ধোধন হয়েছে গতকাল। কৃষি প্রযুক্তির সমূহের সাথে কৃষকদের পরিচিত করানোই এই মেলার মূল লক্ষ্য। কিন্তু বাস্তবের চিত্রে উঠে এসেছে ভিন্নতা। চমৎকার রঙ্গিন কাপড়ে ডেকোরেশন করা ষ্টল গুলো চকচক করছিল। সাঁজে কোন ঘাটতি ছিল না। সকাল সাড়ে ১০ টায় উদ্ধোধন হলেও বেলা পোনে ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দেখা যায় মেলার অধিকাংশ ষ্টলেই দায়িত্বশীল (যারা দেখাবেন ও বুঝাবেন) লোক নেই। স্বল্প সংখ্যক কৃষক ও চাষী উপস্থিত হলেও তারা শুধু ঘুরছেন। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করেই পরামর্শ কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রে শুধু চেয়ার টেবিল আছে। সামনে দাঁড়িয়ে ২-৩ জন লোক হ্যাঁ হুতাশ করছেন। জানতে চাইলে সরাইল সদরের উচালিয়া পাড়ার বাসিন্দা মো. রূহুল আমিন রূবেল ও শাহজাদাপুর ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ছাদে ও মাটিতে শাকশব্জি ফলমূলের চাষ করছি। মেলায় পরামর্শের জন্য আসছিলাম। কিন্তু পরামর্শ কেন্দ্রে কেউ নেই। অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি। শুধু সাইনবোর্ড দিয়ে কি হবে? আমাদেরকে তো বুঝাতে হবে। অনেকটা হতাশ হয়েই এখন ফিরে যাচ্ছি। ওদিকে ‘কৃষিতে এপসের ব্যবহার’, ‘আধুনিক সেচ পদ্ধতি’, ‘কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের ব্যবহার’ নামক ষ্টলসহ প্রায় ৫টি ষ্টলে কোন লোক ছিল না। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনীরা কায়ছান ও সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল হাসান। মেলা আয়োজনের দায়িত্বে থাকা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির এ বিষয়ে বলেন, দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া আছে। ষ্টল ফাঁকা জনমানব শুন্য রাখা যাবে না। ওই সময়ে হয়ত কেউ নামাজ আদায় করতে আর হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন খাবার খেতে চলে গিয়েছিলেন। পরামর্শ কেন্দ্র থেকে কোন কৃষক বা চাষী লোক না থাকায় পরামর্শ না পেয়ে থাকলে আমি ক্ষমা প্রার্থী। সরাইলে এই ধরণের মেলা প্রথম আয়োজন করেছি।