নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসানের যোগদানের পাঁচ মাসের মাথায় এসেছে বদলীর আদেশ। তাঁর স্থলে আসছেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও জিল্লুল হাকিমের পকেটম্যান শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ। এমন খবর কারখানায় ছড়িয়ে পড়ায় সৈয়দপুর রেল অজ্ঞন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
অভিযোগ রযেছে,পলাতক হাসিনার পেতাত্মার দোসরদের চক্রান্তে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের ২ অক্টোবর রাজশাহী থেকে বদলী হয়ে মোস্তফা জাকির হাসান সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু দায়িত্ব নেয়ার ৫ মাসের মাথায় চক্রান্তকারীদের কুটচালের শিকার হয়ে ফের তাকে পূর্বের স্থানে বদলী করা হয়। তার স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন বিগত পতিত সরকারের আজ্ঞাবহ অদ্ক্ষ রেল কর্মকর্তা শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ।
তিনি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশী বিভাগের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক। এর আগে তিনি লালমনিরহাট থেকে বদলী হয়ে পার্বতীপুর কেলোকার দায়িত্বে ছিলেন। অদক্ষতার কারণে ৩ মাসের মাথায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে পার্বতীপুর থেকে বদলী করে পাকশী বিভাগে দেয়। অনৈতিক বিনিময়ে তিনি যেখানে খুশি সেখানেই বদলী নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ মতে, এই কর্মকর্তা নিজ কর্মস্থলের দায়িত্ব পালনের চেয়ে শেখ হাসিনা সরকারের রেলমন্ত্রী নুরুল হক সুজন,জিল্লুল হাকিম ও তৎকালীন লালমনিরহাটের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের ছিলেন একজন আজ্ঞাবহ রেল কর্মকর্তা।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় কর্মরত শ্রমিক আজিজার,আব্দুল খালেক,আতিয়ার রহমান, হবিবুর রহমানসহ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। ছিলো না কোন কাজের গতি। উৎপাদনও হ্রাস পেয়েছিল। অথচ বর্তমান বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক মোস্তফা জাকির হাসান যোগদানের পর থেকেই সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় কাজের গতি ফিরে এসেছে। শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে কর্মচাঞ্চল্যতা। বিগত সময়ে যাত্রীবাহী কোচের আউটটার্ন ছিল ১১০ থেকে ১২০ পর্যন্ত। কিন্তু এই কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকে লক্ষ্যমাত্রা দেড় গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে আউটটাউর্ন দেয়া হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টি যাত্রীবাহী কোচ।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোস্তফা জাকির হাসান বিগত সরকারের আমলে হাসিনার প্রেতাত্মাদের রোষানলে পড়ে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারপরেও রেলবান্ধব কর্মকর্তা হিসেবে তার নিরলস পরিশ্রম লক্ষ্য করার মত ছিল। সরকার পরিবর্তনের পর বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের আমলেও এমন দক্ষ রেল কর্মকর্তাকে হতে হচ্ছে মানসিক নির্যাতনের শিকার।
তাদের মতে, দুর্নীতিবাজ ও রেল অঙ্গনের নিয়োগ বাণিজ্যের হোতা শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে (ডিএস) যোগদান করলে রেলওয়ে কারখানাটি ফের চক্রান্তের শিকার হবে। হ্রাস পাবে উৎপাদন। থাকবে না কোন শৃঙ্খলা। বেড়ে যাবে রেলের লোহা চুরি। শুরু হবে কেনাকাটায় বড় ধরনের কমিশন বাণিজ্য। এমন অবস্থায় রেলওয়ের সাধারণ শ্রমিক কর্মচারীরা মোস্তফা জাকির হাসানের বদলীর আদেশ স্থগিত করতে রেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তাক্ষেপ কামনা করেছেন।