অগ্নি ডিভাইস ও রোবট আগুন লাগলে সতর্ক বার্তা দেবে

 আগুন লাগলেই সতর্ক করবে ‘অগ্নি’ নামে একটি ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন বরিশালের খুদে বিজ্ঞানী ইরান সরদার। অফিস আদালত, শিল্প-কারখানা কিংবা বাসা-বাড়িতে আগুন লাগলে মানুষের মতো করে আশপাশের লোকজনকে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ডেকে সতর্ক করার পাশাপাশি অ্যালার্ম বাজিয়ে সতর্ক করে দেবে খুদে ‘বিজ্ঞানী’ ইরান সরদারের উদ্ভাবিত ‘অগ্নি’ নামের ডিভাইস। এর পূর্বে সে একটি ‘রিবা’ নামে একটি রোবট বানিয়েছে।

অগ্নি ডিভাইসটির প্রধান কাজ হচ্ছে বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, শিল্প-কারখানার লাইন থেকে গ্যাস লিকেজ হলে ডিভাইসটি গ্যাস শনাক্ত করে সেকেন্ডের মধ্যে অটোমেটিক গ্যাস লাইন এবং বাসার গ্যাস সিলিন্ডার বন্ধ করে দেবে। পাশাপাশি  রেড সিগন্যাল এবং অ্যালার্ম বাজিয়ে আশপাশের লোকজনকে সতর্ক করে দেবে।

এছাড়াও বাসা-বাড়ির গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার আগে ডিভাসইটি গ্যাস বাসার বাইরে বের করে দেবে এবং সেখানে যদি আগুন লাগে বা অগ্নিকান্ডে দুর্ঘটনা ঘটে যায় তাহলে “অগ্নি” ডিভাইসটি সেকেন্ডের মধ্যে মানুষের মতো আশপাশের লোকজনকে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় ডেকে সতর্ক করার পাশাপাশি অ্যালার্ম বাজিয়ে সতর্ক করে দেবে।

এমনই এক ডিভাইস ও রোবট উদ্ভাবন করে রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা গ্রামের ইব্রাহিম সরদার ও মমতাজ বেগমের ছোট ছেলে খুদে বিজ্ঞানী ইরান সরদার। সরকারি গৈলা মডেল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ইরান সরদার বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। ইরান বর্তমানে ঢাকা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল  ইউনিভার্সিটি পড়াশোনার জন্য ভর্তি হতে ইচ্ছুক। 

খুদে বিজ্ঞানী ইরান সরদার বলেন, আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত অগ্নিকান্ড-দুর্ঘটনা  লেগেই রয়েছে। যা একটি মানবসৃষ্ট ভয়াবহ দুর্যোগে রূপ নিয়েছে। অগ্নি দুর্ঘটনার মূল কারণ হচ্ছে গ্যাস লাইন লিকেজ এবং মানুষের অসাবধানতা। এই অগ্নি দুর্ঘটনা থেকে  বেশ কিছুটা সমস্যা সমাধান করার জন্য ‘অগ্নি’ নামের এই ডিভাইসটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, শিল্প-কারখানায় ’অগ্নি’ নামের এই ডিভাইসটি ব্যবহার করা হলে অগ্নি দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। 

খুদে বিজ্ঞানী ইরান সরদার আরও বলেন, সর্বশেষ দেশের অন্যতম স্থান বাংলাদেশ সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পর আমি অগ্নি ডিভাইস উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করে ইতোমধ্যে সফল হয়েছি। মানুষের ব্যবহার উপযোগ্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে অগ্নি ডিভাইসটি তৈরি করা সম্ভব। ডিভাইসটি তৈরি করতে সর্বমোট দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর পূর্বে আমি ‘রিবা’ নামে একটি রোবট বানিয়েছি।

তিনি আরও জানান, সরকারি কিংবা কোন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সহায়তা পেলে বাণিজ্যিকভাবে অগ্নি ডিভাইস তৈরি করে বাজারজাত করা সম্ভব হবে। আর এ ডিভাইস সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের একটি বড় ভয়াবহ মানবসৃষ্ট দুর্যোগ অগ্নিকান্ড থেকে বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত এবং শিল্প-কারখানাকে অগ্নিকান্ডের হাত  থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

এব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন বলেন, বাংলাদেশে অলিতে-গলিতে এখন মানবসৃষ্ট নানা দুর্যোগের মধ্যে অন্যতম অগ্নিকান্ড। আমাদের দেশে অগ্নিদুর্ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। এরই মধ্যে খুদে বিজ্ঞানী ইরান সরদারের নতুন উদ্ভাবন ‘অগ্নি’ ডিভাইসটি সময়োপযোগী একটি উদ্ভাবন।দেশে অগ্নিকান্ডে কোটি কোটি টাকা সম্পদের ক্ষতি হয়। খুদে বিজ্ঞানী ইরান সরদারের ‘অগ্নি’ ডিভাইসটি অগ্নিকা-থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে এবং মানুষকে সচেতন করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। বর্তমান বাংলাদেশে অগ্নিদুর্ঘটনা পরিস্থিতি বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ এই টেকসই উদ্ভাবনের বিষয়টি ব্যাপক প্রসারের লক্ষে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে।