সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গেট খুলতেই শোনা গেলো উচ্ছ্বসিত কণ্ঠস্বর "হামজা! হামজা! হামজা!" শত শত ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ঝলসে উঠল, যেন আলোতেই সাজিয়ে দিলেন বাংলাদেশ ফুটবলের নতুন স্বপ্নদ্রষ্টাকে। ভিড় ঠেলে বেরিয়ে এলেন হামজা চৌধুরী। পরনে সাধারণ পোশাক, মুখে আত্মবিশ্বাসের হাসি। প্রথমেই মিডিয়ার সামনে এলেন, ইংরেজিতে বললেন কিছু কথা। কিন্তু ভক্তদের দাবি বাংলায় বলো সিলেটী। হামজার হাসি ফোটে, চেনা সুরে বলেন, "ইনশাল্লাহ আমরা উইন খরমু। কোচ হ্যাভিয়ের কাভরেরার লগে বহুত্তা মাতছি। আমরা উইন খরিয়া প্রগ্রেস করতাম ফারমু।" সেই মুহূর্তে বিমানবন্দর যেন এক উৎসবের মঞ্চ। কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, কারও গলায় লাল-সবুজের পতাকা। হাজারো চোখের দৃষ্টি এই ব্রিটিশ-বাংলাদেশি মিডফিল্ডারের দিকে।
সিলেট থেকে সোজা হবিগঞ্জের বাহুবল। গন্তব্য বাবার বাড়ি, স্নানঘাট গ্রাম। সারা গ্রাম যেন প্রস্তুত তাকে বরণ করতে। ছোট ছোট ছেলেরা ফুটবল হাতে ছুটছে, বাড়ির সামনে বাঁশের খুঁটিতে টাঙানো হয়েছে শুভেচ্ছা ব্যানার। সন্ধ্যায় আয়োজন হবে এক ভিন্ন পরিবেশে এতিম শিশুদের সঙ্গে ইফতার করবেন তিনি। এই মানুষটা শুধু মাঠের যোদ্ধা নন, হৃদয়েরও নায়ক।
সিলেট-হবিগঞ্জ পর্ব শেষে ঢাকা হয়ে উড়াল দেবেন শিলংয়ের পথে। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের মঞ্চে ভারতের বিপক্ষে অভিষেকের অপেক্ষা। বাংলাদেশের হয়ে প্রথমবার মাঠে নামবেন তিনি, এক নতুন অধ্যায়ের শুরু করবেন লাল-সবুজের জার্সিতে। হয়তো সেদিন, স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে কিংবা টিভির পর্দায় লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হবে; "হামজা! হামজা! হামজা!"