মাটি দূষণ রোধে উদ্যোগ নিতে হবে

এফএনএস : | প্রকাশ: ১৭ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
মাটি দূষণ রোধে উদ্যোগ নিতে হবে

মাটি বা মৃত্তিকা হলো পৃথিবীর উপরিভাগের নরম আবরণ যা পরিবেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বর্তমানে এই মহামূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ নানাভাবে দূষিত হচ্ছে। মাটির উপরের স্তরের উৎকর্ষ মানের উপর মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা নির্ভর করে। কিন্তু মানুষ সৃষ্ট বিভিন্ন দূষণের ফলে মাটির উপরের স্তরের পুষ্টি পদার্থসমূহ অপসারিত হচ্ছে, মাটিতে বসবাসকারী বিভিন্ন অণুজীবের দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপে ব্যাঘাত ঘটছে এবং মাটিতে বাইরের বিভিন্ন জৈব ও অজৈব উপাদানের সংযোজন ঘটছে। যার ফলে মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা নষ্ট হচ্ছে দিন দিন। শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য (লোহা, সিসা, পারদ ইত্যাদি) মাটির সাথে মিশে, অতিরিক্ত কীটনাশক মাটির পুষ্টি উপাদান নষ্ট করে, পলিথিন প্লাস্টিক সহজেই মাটির সাথে মিশে যায় না, অজৈব ও রাসায়নিক পদার্থ মাটির অণুজীব ধ্বংস করে খাদ্য শৃঙ্খলে প্রভাব বিস্তার করে, নগরায়ন-শিল্পায়নের প্রভাব, বন জঙ্গল উজাড় ইত্যাদি কারণে মাটি দূষণ ঘটে। এছাড়াও পেট্রোলিয়ম তেল পারমাণবিক বর্জ্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি মাটির সাথে মিশে দূষণ ঘটায়, যা উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবনের হুমকি স্বরূপ। এর মধ্যে মানুষের সৃষ্টি প্লাস্টিক দূষণ পৃথিবীতে ইকোসিস্টেমের জন্য এক ভয়ংকর বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই প্লাস্টিকের ব্যবহার ক্রমশ বেড়েই চলেছে। প্লাস্টিক দূষণ বিপন্ন করে তুলেছে মানুষ ও জীবের অস্তিত্বকে। ব্যাপক ভাবে দূষিত হচ্ছে মাটিও। পরিবেশবিদরা বলছেন, প্লাস্টিকের কারণের মাটি দূষণের ফলে বিভিন্ন অণুজীব মারা যাচ্ছে। প্রভাব পড়ছে ফসল উৎপাদনেও। মাটি দূষণ থেকে রক্ষা পেতে সরকার, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। তেমনি প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। আইনের কঠোর প্রয়োগও নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। এ সমস্যা সমাধানে সিউডোমোনাস গ্রুপের কিছু ব্যাকটেরিয়া প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্যকে ধ্বংস করতে পারে। এ জাতীয় অনুজীবসমূহকেও ব্যবহার করে মাটির প্লাস্টিক দূষণ রোধ করা যায়। সরকার চাইলে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক এক বছরের মধ্যে বন্ধ করা সম্ভব। তা করতে পারলে আমাদের জন্য নতুন মাত্রা তৈরি হবে। ইমপোর্টের মাধ্যমে অন্য দেশের দূষণকারী প্লাস্টিক আমাদের দেশে প্রবেশ করছে নানা পণ্যেও মোড়কের মাধ্যমে। এ ক্ষতির দায়ভার কে নিবে? প্লাস্টিক উৎপাদন কমাতে হবে, প্লাস্টিক উৎপাদনকারীদের করের আওতায় আনতে হবে। এতে করে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি মাটি দূষণও রোধ করা সম্ভব। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্লাস্টিক পণ্য ও মেটাল পদার্থের পুনঃ প্রক্রিয়াজাতকরণ করে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। মাটি দূষণ রোধে সর্বাত্মক সচেতনতার বিষয়ের ওপর জোর দিতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW