টাকা আত্মসাৎয়ের দায়ে নগরকান্দার সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তার নামে মামলা

এফএনএস (মোঃ শওকত আলী শরীফ; নগরকান্দা, ফরিদপুর) : : | প্রকাশ: ১৯ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম
টাকা আত্মসাৎয়ের দায়ে নগরকান্দার সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তার নামে মামলা

এতিমের বরাদ্দ সহ ভাতা—ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে মামলাগুলো করেন দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. ইমরান । জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের উপপরিচালক রতন কুমার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে কক্সবাজার সমাজসেবা কার্যালয়ে প্রবেশন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউ খালি ইউনিয়নের ১০ হাজার গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়া তিনি ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন— নগরকান্দায় কর্মরত ছিলেন। মামলার এজাহারে বলা হয় অবহেলা, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন সাবেক এই কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫(২) ধারা শাস্তিযোগ্য অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। একটি মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নগরকান্দা উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন ২০২২-২৩ অর্থবছরের এতিমদের বরাদ্দকৃত সাড়ে ১২ লাখ টাকা ২০২৩ সালের ২০ মার্চ অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন এবং ঘুষ দাবিপূর্বক শাস্তিযোগ্য অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।

অপর মামলার এজাহারে বলা হয়, উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরসহ বিভিন্ন সময় অবিতরণকৃত বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতার ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন পূর্বক বিতরণ না করে ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে আত্মসাৎ করেন ৎ। অপর আরেকটি মামলায় উল্লেখ করা হয়, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি তহবিল থেকে ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন— ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার ৬০০ টাকা উত্তোলনপূর্বক নিজ কাজে ব্যবহার করেছেন।

এ বিষয়ে উপপরিচালক রতন কুমার বলেন, সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা কার্যালয় অনুসন্ধান করে এবং সত্যতা বেরিয়ে আসে। তিনি মোট ১ কোটি ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩৫০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এসব অভিযোগে ফরিদপুরের সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে পৃথকভাবে তিনটি মামলা করা হয়েছে।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘তৎকালীন আমার অফিসের সরকারি কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সঙ্গে আমার বিরোধ হয়। এই বিরোধের জেরে আমার নামে দুদকে মিথ্যা অভিযোগ করেন। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় মামলা হলে তদনে— তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মূলত এতিমেরা না থাকায় টাকাগুলো দেওয়া হয়নি, বর্তমানে এই টাকাগুলো ব্যাংকে রয়েছে। এ ছাড়া আমার জমি বিক্রিসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোনের টাকা ব্যাংকে লেনদেন হয়, এ কারণে দুদক সন্দেহ করেছে।’

উল্লেখ্য, সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ নগরকান্দায় কর্মরত থাকা অবস্থায়, তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন জাতীয়  পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।  পত্রিকায়  সংবাদ প্রকাশের পর সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির সত্যতা পাওয়ায়, তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল ।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে