মানবেতর জীবন যাপন করছেন হোসেনপুরের শতবর্ষী দম্পতি

এফএনএস (উজ্জ্বল কুমার সরকার; হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ) : : | প্রকাশ: ২২ মার্চ, ২০২৫, ০২:১৯ পিএম
মানবেতর জীবন যাপন করছেন হোসেনপুরের শতবর্ষী দম্পতি

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ডাংরি গ্রামের,প্রায় শত বছরের প্রবীণ ব্যক্তি মফিজ মাস্টার, এখনো সবকিছু প্রায় স্বাভাবিক ভাবেই করতে পারেন। কুরআন ও বই পুস্তক খালি চোখে পড়তে পারেন। এছাড়াও বাংলা ও ইংরেজিতে লিখতেও পড়তে পারেন তিনি। গ্রামের মানুষের কাছে এই বয়সী মানুষটির আলাদা ভক্তি রয়েছে।তবে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছেন বর্তমানে। কিন্তু শত কষ্টেও আত্মসম্মানবোধ থেকে হাত পাতেন না কারো কাছে।

‎‎জানা যায়, সরকারি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী না করলেও স্বাধীনতার আগে থেকেই গ্রামে ছাত্রদের পড়াতেন নিজ উদ্যোগেই । তাই গ্রামে তার পরিচিতি মাস্টার হিসেবেই। পড়ানোর সুবাদে তার হাজারো ছাত্র সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ চাকুরিতে রয়েছে অনেক ছাত্র।

‎সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মফিজ মাস্টারের ৩ মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। সবারই বিয়ে হয়েছে।রিজিকের তাগিদে ছেলেরা ঢাকায় কাজ করেন, বাড়িতে তার সহধর্মিণী রয়েছে। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। মফিজ মাষ্টার ধর্ম পালনে অধিক মনোযোগী। পরহেজগার মানুষ হিসাবে এলাকার সবার নিকট সম্মানিত ব্যাক্তি।

‎এছাড়াও গ্রামের মানুষের বিশেষ আমন্ত্রণে প্রায় প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি যান। সবাই তার নিকট দোয়া নেওয়ার জন্য আসেন। মানুষ খুশি হয়ে যা দেন, তাই হাসিমুখে গ্রহণ করেন। তাই দিয়ে নিজের চলার খরচ মিটিয়ে থাকেন।বর্তমানে কানে সামান্য কম শুনলেও স্মরণশক্তি স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ও রমজান মাসে রোজা রাখতে পারেন তিনি ।

‎গাবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রতিবেশি গ্রামের সাংবাদিক রাজু আহমেদ বলেন,উনি খুবই ভালো মনের মানুষ। এখনো তিনি অনায়েসে কুরআন ও বইপত্র চশমা ছাড়াই পড়তে পারেন। নিজগ্রামসহ আশপাশের গ্রামের সবাই ওনাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করে। কিন্তু উনি আর্থিকভাবে খুব অসচ্ছলতায় আছেন। অন্তত থাকার মতো একটা ঘর হলে স্বস্তি পেতেন।

‎স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর  রাশিদের সাথে কথা হলে তিনি জানান,বর্তমানে মফিজ মাস্টার বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন কিন্তু তা দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর চিকিৎসা ও  সংসার চালানো কষ্টকর। এলাকাবাসীর সহায়তায় কোনোমতে চলে। ‎মফিজ মাস্টার বলেন, আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ আছি। বর্তমানে আমার বয়স ৯৫ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আমার ঘরটা ভেঙে পড়ে গেছে বর্তমানে ছেলের ঘরে থাকি কিন্তু তারা বাড়ী আসলে থাকার চরম অসুবিধা হয়ে যায়।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে