বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যবহার হবে স্টারলিংক

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৩ মার্চ, ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যবহার হবে স্টারলিংক

আগামী ৭ থেকে ১০ এপ্রিল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য দেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরা, অর্থনৈতিক সংস্কারের রূপরেখা প্রদর্শন করা এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সংযোগ স্থাপন করা।

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে এই সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ৯ এপ্রিল অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্টারলিংকের উচ্চগতির ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্প্রচার করা হবে, যা দেশের ডিজিটাল সংযোগ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরি জানান, এটি দেশের ফ্রিল্যান্সিং খাত এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের অর্থনীতির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সামিটে ৫০টিরও বেশি দেশের ২৩০০-এর অধিক বিনিয়োগকারী নিবন্ধন করেছেন, যার মধ্যে ৫৫০ জনের বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী। চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সিঙ্গাপুর এবং জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় করপোরেট নেতারা এতে অংশ নেবেন। উপস্থিত ব্যক্তিত্বদের মধ্যে থাকবেন:

- জারা গ্রুপের সিইও অস্কার গার্সিয়া মেসেইরাস
- ডিপি ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বিন সুলাইয়েম
- ব্রিটিশ ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন
- স্যামসাং সি অ্যান্ড টি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট কিয়ংসু লি
- গিওর্দানো-র সিইও জুনসিওক হান
- এক্সেলারেট এনার্জির প্রেসিডেন্ট স্টিভেন কোবোস
- মেটার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর সারিম আজিজ

এছাড়া বি ক্যাপিটাল, গবি, কনজাংশন, মারুবেনি ও জি এফ আর-এর মতো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলোও এতে অংশ নেবে।

সামিটের অংশ হিসেবে ৭ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়ার ২৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম, মিরসরাই ও কোরিয়ান ইপিজেড পরিদর্শন করবেন। ৮ এপ্রিল তারা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখবেন। এছাড়া, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্টার্টআপ সংযোগ কার্যক্রম ও নেটওয়ার্কিং সেশন অনুষ্ঠিত হবে।

৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে সামিটের মূল অনুষ্ঠান, যেখানে উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত, নীতিনির্ধারক ও শীর্ষ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত থাকবেন। তরুণ উদ্যোক্তা এক্সপো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্রেকআউট সেশন এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজন করা হবে।

১০ এপ্রিল বিভিন্ন ব্রেকআউট সেশনের মধ্যে থাকবে:
ডিজিটাল অর্থনীতি: সিটি এনএ ও ইউএনডিপি
টেক্সটাইল: এইচএসবিসি ও বিজিএমইএ
কৃষি ও কৃষি-প্রক্রিয়াজাতকরণ: ডাচ দূতাবাস ও এলসিপি
স্বাস্থ্যসেবা: ইন্সপিরা, ইবিএল ও সাজিদা ফাউন্ডেশন
এছাড়া, বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ মিটিং রুম বরাদ্দ থাকবে এবং ম্যাচমেকিং সেশন ও রাউন্ড-টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরি বলেন, “বহু বিদেশি বিনিয়োগকারী এখনও বাংলাদেশের প্রকৃত বিনিয়োগ পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন নন। এই সামিটের মাধ্যমে আমরা তাদের দেশের বিনিয়োগবান্ধব নীতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে অবহিত করতে চাই।”

সামিটের পার্টনারদের মধ্যে রয়েছে ইউএনডিপি, এফসিডিও, গ্রামীণফোন, বিশ্বব্যাংক ও ফিকি, যারা যৌথভাবে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে কাজ করবে।

বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫ শুধুমাত্র দেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরবে না, বরং দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে