দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পদ্মা সেতু চালুর পর এ নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ কমলেও ঈদের সময় যাত্রীদের দুর্ভোগ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আসন্ন ঈদুল ফিতরে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। নৌরুটে দীর্ঘদিন ধরে নাব্য সংকট চলছে এবং দৌলতদিয়া প্রান্তের ৭টি ঘাটের মধ্যে ৪টি বন্ধ রয়েছে, যা ফেরি চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। পত্রপত্রিকার খবরাখবর থেকে জানা যায়, দৌলতদিয়া প্রান্তের লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকায় একটি মাত্র চ্যানেল দিয়ে ফেরি ও লঞ্চ চলছে, যা দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। লঞ্চ চালকরাও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনের আশ্বাস থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি। যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, মৌসুমি পরিবহনের কাউন্টার বসিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়, যা প্রতিবছর প্রশাসনের সভার সিদ্ধান্তের ব্যত্যয় ঘটায়। তিন চাকার যানবাহনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা দেখা যায়। এবারের ঈদযাত্রায় ১৭টি ফেরি ও ২০টি লঞ্চ চলাচল করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি)। ফেরিগুলোর মধ্যে ৯টি রো রো (বড় ফেরি), ৩টি কে টাইপ এবং ৫টি ছোট ফেরি রয়েছে। তবে তিনটি ফেরিঘাট দিয়ে এত বিপুলসংখ্যক যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছিনতাই চক্রের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট, পুলিশ, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। তবে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া ও দুর্ভোগ এড়াতে প্রশাসনের আরও কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে নাব্য সংকট নিরসন ও অবকাঠামো উন্নয়ন না করা হলে ঈদের সময় যাত্রীদের দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হবে। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে যাত্রীসাধারণ নির্বিঘ্নে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারেন।