জয়িতা সম্মাননা পেলেন রাশেদা বেগম

এফএনএস (হাফিজুর রহমান হৃদয়; নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৩:২৫ এএম
জয়িতা সম্মাননা পেলেন রাশেদা বেগম

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় জয়িতা সম্মাননা পেয়েছেন রাশেদা বেগম নামের এক কৃষক পরিবারের নারী। তিনি বল্লভেরখাস ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের কৃষক এর স্ত্রী। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সমগ্র দেশব্যাপী পরিচালতি “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় গতকাল সোমবার উপজেলা প্রশাসন সভাকক্ষে বেগম রোকেয়া দিবস ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্ত আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ। এ সময় থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। রাশেদা বেগম জানান তিনি বিএ পাসের পর ২০১৩ সালে প্রথম গণস¦াস্থ্য সংস্থা থেকে ৬ মাস মেয়াদী আবাসিক ধাত্রী প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৬ সালে পূনরায় বেসরকারি সংস্থা ল্যাম্ব থেকে ৬ মাস মেয়াদী আবাসিক “কমিউনিটি স্কিল্ড বার্থ এ্যাটেনডেন্ট” প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে ২০১৯ সালের জুন মাসে ওই সংস্থায় কমিউনিটি স্কিল্ড বার্থ এ্যাটেনডেন্ট হিসেবে যোগদান করে গর্ভবতী মা, শিশুর সেবা প্রদান করে আছেন। পারিবারিক জীবনে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে এবং একমাত্র ছেলে নাগেশ্বরী সরকারি ডিগ্রি কলেজে এইচএসসিতে পড়াশুনা করছে। তিনি আরও জানান তার স্বামী একজন কৃষক হওয়ায় পারিবারিকভাবে হাঁসমুরগী ও গরু ছাগল পালন, কৃষিকাজ থেকে উৎপাদিত ফসল এবং তার মাসিক আয়ের টাকা দিয়ে সংসার চালান। অপরদিকে কচাকাটা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের ধনীরামপুরে এসডিইউ কমিটি ও ল্যাম্ব সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত “নিরাপদ প্রসব কেন্দ্রে” গর্ভবতী নারী, কিশোরী, দুগ্ধদানকারী মায়েদেরকে কাউন্সেলিং, নিরাপদ প্রসব, স্বাস্থ্য পুষ্টি নিরলসভাবে সেবা প্রদান করে আসছেন তিনি। এ অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত প্রসব পূর্ববর্তী সেবা (এএনসি) ৪২০জন গর্ভবতী মা, প্রসব পরবর্তী সেবা (পিএনসি) ৮১জন মা, নিরাপদ নরমাল ডেলিভারী-৩৫জন গর্ভবতী নারীর, কাউন্সেলিং-৪২০জনকে (গর্ভবতী নারী, কিশোরী, দুগ্ধদানকারী মা), ২০জন সমস্যাজনিত গর্ভবতী রোগীকে আরো ভালো চিকিৎসার জন্য নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও কুড়িগ্রাম মেডিকেলে রেফার করেন এবং পাশাপাশি প্রায় ৩৬০টি পরিবারে বাড়ি ভিজিট করেন যাতে স¦াস্থ্যসেবা ও তাদের মধ্যে আরো সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। স্থানীয়রা জানান একজন দক্ষ ধাত্রী হিসেবে এভাবেই প্রত্যন্ত চর অঞ্চলে গর্ভবতী নারী, কিশোরী, দুগ্ধদানকারী মায়েদের নিরলসভাবে সেবা প্রদান করে আসছেন রাশেদা বেগম। এতে করে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে নবজাতক শিশু মৃত্যু ও মাতৃ মৃত্যুর হার পূর্বের চেয়ে অনেক কমে গেছে যাহা দেশের স্বাস্থ্যসেবা মান উন্নয়ন তথা বৈশ্মিক টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন তারা। পুরস্কার পেয়ে রাশেদা বেগম ল্যাম্ব কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। তার প্রত্যাশা সকলের সহযোগিতায় তিনি সমাজের জন্য ভালো কিছু করে যেতে যান জীবনের শেষ মুহূর্তপর্যন্ত। উপজেলা সিব্বির আহমেদ বলেনে জয়িতা অন্বেষণের মাধ্যমে অন্যান্য নারীরা উৎসাহী হয়ে সমাজের জন্য ভালো কাজ করে সবার পাশে থাকবে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধের মাধ্যমে জয়িতা নারীরা একটি সুন্দর দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে