৯৪ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৯ জনই অকৃতকার্য

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৩:৫১ এএম
৯৪ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৯ জনই অকৃতকার্য

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে এসএসসি পরীক্ষা। এরমধ্যে এসএসসি-দাখিল পরীক্ষার্থীদের টেষ্ট পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে জেলার গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসা। ইতোমধ্যে স্কুল ও মাদ্রাসায় শুরু হয়েছে পরীক্ষার্থীদের ফরমপূরণ। টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্যের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরমপূরণ করতে গিয়েই শুরু হয়েছে বিপত্তি। অকৃতকার্য হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ফরমপূরণে জন্য প্রতিদিনই স্কুল ক্যাম্পাসে ভীড় করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের। উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তীতে টেস্ট পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, এবার রেকর্ড সংখ্যক পরিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। ফলে অকৃতকার্য হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে রেকর্ড সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী অকৃতকার্য হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চরম ইমেজ সংকট পরেছে। তবে স্কুলের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে মাদ্রাসায় কৃতকার্যের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার ধানডোবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য ৯৪ জন ছাত্র-ছাত্রী টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে। এরমধ্যে ৮৯ জন পরীক্ষার্থীই অকৃতকার্য হয়েছে। যে পাঁচজন শিক্ষার্থী সব বিষয়ে পাশ করেছে তারমধ্যে দুইজন ছাত্র এবং তিনজন ছাত্রী। বাকি ছাত্র-ছাত্রীরা এক থেকে দশ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। পালরদী মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র ৪৬ জন। সরিকল স্কুলে ১০৮ জন শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছে। এরমধ্যে কতোজন উত্তীর্ণ হয়েছে প্রধানশিক্ষকের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি তথ্য না দিয়ে স্কুলে যেতে বলেছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি থাকায় পূনরায় টেস্ট পরীক্ষা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সরকারী গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৬৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০৭ জন কৃতকার্য হয়েছে। মাহিলাড়া এএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৫৪ জনের মধ্যে ৯৬ জন পাশ করেছে। এছাড়াও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিগত বছরের তুলনায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবিষয়ে একাধিক শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস ফাঁকি, পড়ালেখায় অমনোযোগীসহ নানাবিধ কারনে এবার টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, শিক্ষার্থীদের অকৃতকার্য হওয়ার পেছনে শিক্ষকরাও অনেকটা দায়ী। শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের চেয়ে প্রাইভেট কোচিংয়ে আগ্রহী বেশি অনেক শিক্ষক। গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা টাকার অভাবে প্রাইভেট পরতে পারছেনা। যে কারনে অকৃতকার্যের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে গৌরনদী পৌর নাগরিক কমিটির সভাপতি জহুরুল ইসলাম জহির বলেন, দেশে করোনা পরিস্থিতির পর থেকেই শিক্ষার পরিবেশ খারাপ হতে শুরু করেছে। আবার আন্দোলন-সংগ্রামের কারণেও শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার প্রতি ছিলো উদাসিন। যে কারনে টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষকদের যৌথ প্রচেস্টায় শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে নেওয়া উচিৎ বলে মনে করছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, আগামী ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে পূনরায় পাঁচটি বিষয়ে শর্ট সিলেবাসে টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাতে যেসব শিক্ষার্থীরা কৃতকার্য হতে পারবে তাদেরকেই ফরমপূরণ করানো হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে