জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানায় হামলা, পুলিশ কনস্টেবলকে মারধর ও চাঁদাদাবির অভিযোগে পৃথক দুটি মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মেহেদী আশিক পার্থকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে চাঁদাদাবির অভিযোগে করা মামলায় জামিন দেন এবং থানায় হামলা ও পুলিশ কনস্টেবলকে মারধরের মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
মেহেদী আশিক পার্থ (৪৪) ক্ষেতলাল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন। তিনি ওই উপজেলা সদরের মাইনুর রহমান আঙ্গুরের ছেলে।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার শাজাহানপুরের তোফাজ্জল হোসেন সাত বছর আগে ক্ষেতলাল পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের মিজানুর রহমানের কাছে পাঁচ শতক জমি কেনেন। গত ১৮ মার্চ দুপুরে জমির দলিল সম্পাদন করতে ক্ষেতলাল সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে আসেন। এসময় বিএনপি নেতা মেহেদী আশিক পার্থ তার লোকজন নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে এসে তোফাজ্জলের কাছে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদাদাবি করেন। চাঁদার টাকা না দিলে জমি সম্পাদন করতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তোফাজ্জল হোসেন ও তার স্বজনদের মারধর করে জখম করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তোফাজ্জল ও তার স্বজনদের উদ্ধার করে ক্ষেতলাল সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। আশঙ্কাজনক হওয়ায় তোফাজ্জল হোসেনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়।
ওই চাঁদাদাবির ঘটনায় তোফাজ্জলের স্ত্রী জনয়ব বেগম ও তার স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে থানায় আসেন। তিনি মেহেদী আশিক পার্থ ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলা দায়ের হওয়ার খবর পেয়ে বিএনপি নেতা মেহেদী আশিক পার্থ লোকজন নিয়ে থানায় যান। ওই সময় থানা ফটকের প্রহরি কনস্টেবল কাজী জাফর থানায় ঢ়ুকতে নিষেধ করলে তাকে গালিগলাজ করেন। একপর্যায়ে কনস্টেবল কাজী জাফরকে চড়-থাপ্পর এবং তার বুকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করেন। তখন থানায় জরুরি এলার্ম বাঁশি দেওয়া হয়। সেনাবাহিনী এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনার পর ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় কুমার বর্মন বাদি হয়ে মেহেদী আশিক পার্থকে প্রধান করে ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
আদালতের এএসআই ফিরোজ কবির বলেন, মেহেদী আশিক পার্থর নামে দুটি মামলা ছিল। একটি চাঁদাদাবির মামলা, আরেকটি থানায় হামলার মামলা। আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশীথ রঞ্জন বিশ্বাস চাঁদাদাবির মামলায় তাকে জামিন দিয়েছেন। কিন্তু থানায় হামলার মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।